Site icon Doinik Bangla News

অলির সাথে ২৬ বিএনপি নেতার রুদ্ধদ্বার বৈঠক

উদ্ধৃতি বাংলা ইনসাইডারঃ রাজনীতিতে নানা মেরুকরণ চলছে। এই মেরুকরণের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে কর্নেল (অব:) অলি আহমেদের ভূমিকা নিয়ে। সাবেক বিএনপির এই নেতা বর্তমানে এলডিপির চেয়ারপারসন। কিন্তু এলডিপির রাজনীতির চেয়ে বিএনপির রাজনীতি নিয়ে তিনি এখন বেশি মনঃসংযোগ দিয়েছেন। গতকাল রাতে তার বাসায় নৈশভোজে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিএনপির ২৬ নেতা। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির ৯ জন নেতার উপস্থিত ছিলেন, বাকিরা সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এরা সকলেই তারেক জিয়ার ওপর ক্ষুব্ধ এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর অসন্তুষ্ট। আর এ কারণে এই বৈঠক নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে কর্নেল (অব:) অলির ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা, একটি বিশেষ উপলক্ষে এই সমস্ত নেতাদেরকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। নৈশভোজের পাশাপাশি সমকালীন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তবে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন জানিয়েছেন যে, এলডিপির কোনো নেতা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। কর্নেল (অব:) অলি আহমেদ এবং বিএনপি নেতারা অত্যন্ত গোপনীয়তার এই সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও দুইজন স্থায়ী কমিটির সদস্যের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন এবং কর্নেল (অব:) অলি আহমদের সঙ্গে তাদের কথা বলিয়ে দেন। এই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে বিএনপির কোনো নেতাই সুস্পষ্ট ভাবে কোনো বক্তব্য রাখেননি। তবে একজন বলেছেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিএনপির ভূমিকা নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এই বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি কতটা সক্রিয় এবং গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারছে তা নিয়ে আলোচনা হয় এবং সে ব্যাপারে বিএনপির ২৬ নেতাই হতাশা প্রকাশ করেন। কর্নেল (অব:) অলি আহমেদ বিএনপির এই মুহূর্তে করনীয় কি সে সম্পর্কে আলোকপাত করেন এবং একটি যোগ্য নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বলে জানা গেছে। বিশেষ করে বর্তমান বিএনপিকে নেতৃত্বহীন হিসেবে অভিহিত করেছেন কর্নেল (অব:) অলি। বিএনপির একজন নেতা জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে কর্নেল (অব:) অলি আহমেদ প্রায় ৩০ মিনিট বক্তব্য রাখেন, যে বক্তব্যে তিনি বিএনপির বিভিন্ন সঙ্কট, জিয়াউর রহমানের আদর্শ এবং সে আদর্শ থেকে বিএনপির বিচ্যুতির ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন। কর্নেল (অব:) অলি আহমেদ বিএনপির সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করেছেন এর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে গিয়ে বলেন যে, বিএনপি এখন নেতৃত্বশূন্য দল কিন্তু জনসমর্থন আছে। বিএনপির বেগম খালেদা জিয়াকেই নেতা রাখা উচিত এবং খালেদা জিয়াকে নেতা রেখে সামনে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিকে কার্যকরী নেতা হিসেবে উপস্থাপন করা উচিত। এরকম কার্যকরী নেতা তারেক জিয়া নয় এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তো নয়ই বলে মন্তব্য করেন। বিএনপির অধিকাংশ নেতাই তার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। তবে ওই বৈঠকে উপস্থিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, বিএনপি ভাঙ্গা হলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না এবং সাধারণ মানুষের কাছে যারা বিএনপি ভাঙ্গবে তাদেরকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এটি একটি নেতিবাচক ফলাফল আনতে পারে। স্থায়ী কমিটির সদস্য এটিও বলেছেন যে, আমরা যদি বিএনপিকে বাঁচানোর জন্যও দল ভাঙ্গি তাহলে এটি মনে করা হবে যে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দল ভাঙ্গা হয়েছে, এর পেছনের সরকারে হাত রয়েছে। এই বাস্তবতায় স্থায়ী কমিটির সদস্য সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে নেতৃত্ব পরিবর্তনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তবে এই বৈঠকের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো যে, সকল নেতাই নিশ্চিত হয়েছেন যে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি অচল, বিএনপির নেতৃত্বে পরিবর্তন দরকার এবং সেই পরিবর্তনে যারা সত্যিকারের জিয়ার সৈনিক তাদেরকে সামনে আনতে হবে।
Exit mobile version