Site icon Doinik Bangla News

কচুয়া উপজেলার সাচার ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা উদযাপন; দৃষ্টিনন্দন জগন্নাথ মন্দির প্রতিষ্ঠা।

বিশেষ প্রতিবেদকঃ গতকাল অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। পৃথিবীর সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসবের মধ্যে অন্যতম।এই রথযাত্রা ভারতীয় উপমহাদেশে একই সাথে উদযাপন করা হয়।বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরাও এর বাইরে নয়।বাংলাদেশে রথযাত্রার কথা বললেই প্রথমে যে কয়েকটি স্থানের রথযাত্রার নাম আসে তাদের মধ্যে চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার সাচারের রথযাত্রা অন্যতম।

প্রতি বছরের মতো এবার ধর্মীয় সকল আচার নিষ্ঠা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যো দিয়ে উদযাপন করা হয় সাচারের এই রথযাত্রা। গত ১৫০+ বছর ধরে এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই রথযাত্রা এবং সাচার শ্রী শ্রী জগন্নাথ ধামের ইতিহাস লোকমুখে শুনা যায় যে,তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের এই সাচারের জমিদার গঁঙ্গা গোবিন্দ সেনগুপ্ত স্বপ্নে দেখেন যে, ভারতের উড়িষ্যা নগরীর পুরীর জগন্নাথ ধাম থেকে নিম কাঠ মন্দিরে নিকটবর্তী দীঘিতে ভেসে আসছে এবং এই কাঠ দিয়ে জগন্নাথ বিগ্রহ তৈরি করে মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে আদেশ পান।
তারপর ১২৭৫ বঙ্গাব্দ তথা ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে এই মন্দির ও রথ প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং তখন থেকেই এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আশেপাশের কয়েক জেলা এবং ভারত থেকেও ভক্তবৃন্দ সমাগম হতো এবং মাসব্যাপী রথযাত্রার মেলা অনুষ্ঠিত হতো।
এরই মাঝে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক রথটি সম্পুর্ণ ভষ্মিভূত হয় এবং মন্দিরটি অধিকাংশ অংশ ধ্বংস করে দেয়। মন্দিরের দেয়ালে আগুন এবং গুলির চিহ্ন নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত হানাদার বাহিনীর অত্যাচারের চিহ্ন হিসেবে প্রতীয়মান ছিল। তারপর থেকে বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী ভাবে রথ তৈরী করে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হতো।
এরপরে ২০০৪-০৫ সালের দিকে রথটি সরকারি অনুদান এবং সনাতনী ভক্তবৃন্দের সহযোগিতায় পুনঃনির্মিত হয়। এবং গত ৪-৫ বছর ধরে মন্দিরটি পুনঃনির্মান শুরু হয় এবং এ বছরে শেষ হয়।

১৯৭১ সালের পর পুর্নাঙ্গা রথ এবং মন্দির প্রতিষ্ঠার পর অনেক উৎসাহ উদ্ধীপনায় এবার রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের রথযাত্রা অনুষ্ঠানটি ১৫৪তম রথযাত্রা উদযাপন বলে জানা যায়।এতে জগন্নাথ  মন্দির কমিটি,রথযাত্রা উদযাপন কমিটি, কচুয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ,পুজা উদযাপন পরিষদ,জাগো হিন্দু পরিষদ, গীতা স্কুল পরিচালনা পরিষদ সহ আরো অনেক ধর্মিয় সংগঠনের ব্যাপকভাবে উপস্থিতি এবং লাখো ভক্তের সমাগম হয় এই বছরের রথযাত্রা অনুষ্ঠানে।

Exit mobile version