Site icon Doinik Bangla News

কুমিল্লায় আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ; গুলিবিদ্ধ একজন।

মোঃ কাশেদুল হক কাজলঃ কুমিল্লা শহরে সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়াল আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ; এসময় তাদের অস্ত্রের মহড়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

রোববার বিকালে ধর্মপুর রেলগেইট এলাকার এই সংঘর্ষে রাসেল নামে এক আওয়ামী লীগকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

আদর্শ সদর উপজেলার দক্ষিণ দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল হান্নান সোহেল এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফখরুল ইসলাম রুবেলের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ বাঁধে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

সংঘর্ষের জন্য উভয় পক্ষ পরস্পরকে দায়ী করেছে। সংঘর্ষের পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হলেও কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার কর্মকর্তারা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্গাপুরের দুই ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা হান্নান সোহেল ও ফখরুল রুবেলের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। সোহেল ইউনিয়নের কালিকাপুর এলাকার বাসিন্দা। ফখরুলের বাড়ি ধর্মপুরে। তবে দুজনে ধর্মপুর এলাকায় রড-সিমেন্টের ব্যবসা করেন।

২১ অগাস্ট বোমা হামলার বার্ষিকীতে রোববার নগরীর টাউন হলে জনসভার আয়োজন করে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ। তাতে সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যোগ দেয়।

সভাস্থলে যাওয়ার সময় সোহেল ও রুবেলের গ্রুপের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়ায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে গুলি বর্ষণ হয়, পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেল।

সংঘর্ষের সময়কার একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন বন্দুক হাতে মহড়া দিচ্ছে। স্থানীয়রা তাদেরকে ইউপি সদস্য রুবেল ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা চপল বলে চিহ্নিত করেছেন। এছাড়া সিসিটিভির ক্যামেরা ভাঙতে দেখা যায় জনি নামে একজনকে।

ইউপি সদস্য সোহেলের বাবা আবদুল লতিফ সাংবাদিকদের বলেন, সোহেল তার বন্ধু রাসেলের মোটর সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে রুবেল, চপল, জনিসহ একদল পেছন থেকে তার উপর গুলিবর্ষণ করে। রাসেলের পায়ে ও গালে গুলি লেগেছে। সোহেল ও তার চাচা আবদুল মতিনসহ কয়েকজন আহত হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সোহেলের উপর হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন তার বাবা।

সোহেল স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের সমর্থক দাবি করে লতিফ বলেন, “বাহার সাহেবের রাজনীতি করতে গিয়ে গুলি খেয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।”

সোহেল হামলার জন্য রুবেলের অনুসারীদের দায়ী করেছেন। তবে তিনি আর কিছু বলতে চাননি।

অন্যদিকে রুবেল সাংবাদিকদের বলেন, “বয়স্ক একজন আওয়ামী লীগ নেতাকে মারধর করে আবদুল হান্নান সোহেলের লোকজন। এরপর মিছিলে থাকা লোকজন তাদের ধাওয়া করলে পালিয়ে যায়। এদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ আছে। তারাই এ ঘটনার জন্য দায়ী।”

যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম চপল বলেন, “টাউন হলে গণজমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিলে আসার পথে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসারের উপর হামলা করে ইউপি মেম্বার সোহেল। খবর পেয়ে আমাদের কর্মীরা ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তার মোটর বাইক পুড়িয়ে দেয়। এর বেশি কিছু নয়।”

অস্ত্রের মহড়ার অভিযোগ ‘বানোয়াট’ বলে উড়িয়ে দেন এই যুবলীগ নেতা।

সংঘর্ষের সময় পুলিশি পদক্ষেপ নিয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সহিদুর রহমান বলেন, “ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”

কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Exit mobile version