কুমিল্লা মহানগরবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা,”ঈদ মোবারক” ; কাজী ফারুক আহমেদ।

স্টাফ রিপোর্টঃ

কুমিল্লা মহানগর বাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাবেক জি এস মুক্তিযোদ্বা পরিবারের সন্তান কাজী ফারুক আহমেদ। দৈনিক বাংলা নিউজের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন,আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলফু মিয়া, মুজিব নগর সরকারের কর্মচারী নং-০১, গেজেট- ৬৯৩। তিনি পাকিস্তান সরকারের অধীনে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৭০ এর দশকে চট্টগ্রাম জেলাধীন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালী সৈন্যদের নিরস্ত্রীকরণ শুরু হয়। পরবর্তীতে থানা লেভেলে ও বাঙালী পুলিশ সদস্যদের নিরস্ত্রীকরণ আরম্ভ হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রথম গাজীপুর জেলায় জয়দেবপুরে শুরু হয়। পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর গুলি বর্ষণ করে ২০ জনকে হত্যা করে এবং ১৫ জনকে আহত করে। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম জেলাধীন ডবলমুরিং থানায় এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে হানাদার বাহিনী অস্ত্র হামলা চালায়।
ঐ হামলার পর আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলফু মিয়া ওখান থেকে পালিয়ে জীবন বাজি রেখে ভারতের আগরতলা জয় বাংলা অফিসে অবস্থান নেন। তৎকালীন চট্টগ্রামের বর্ষিয়ান নেতা জহুর আহম্মদ চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের দুর্দিনের কান্ডারী ফেনী জেলার প্রয়াত আঃ মালেক উকিলের স্বান্বিধ্যে যুদ্ধের কলা কৌশল রপ্ত করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হয়।

স্বাধীনতার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলফু মিয়া চট্টগ্রাম জেলার ডবলমুরিং থানায় পুনঃ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন। ওখান থেকে বদলী হয়ে ১৯৭২ সালের মাঝামাঝি তিনি চট্টগ্রামের রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং পরিবার পরিজন নিয়ে কর্মস্থলে অবস্থান করেন।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্ভোধন করেন। উক্ত অনুষ্ঠান সফল করার জন্য আমি কাজী ফারুক আহাম্মদ রাউজান আর.আর.এসি’র ছাত্র ও ছাত্র সংসদ (ছাত্র লীগের প্যানেল) থেকে নির্বাচিত জি.এস হিসাবে মাইকিং থেকে আরম্ভ করে, ঐ অনুষ্ঠান সাফল্যমন্ডিত  করতে সহপাঠীদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করি।

সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্র, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ বন্যা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষরযন্ত্র ও দেশী নকশাল বাহিনীর দৌরাত্ব সব মিলিয়ে দেশে একটি নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়। সকল প্রকার ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশ যখন উন্নয়নের দিকে এগোচ্ছিল ঠিক সেই সময় কিছু সংখ্যক পথভ্রষ্ট সেনা কর্মকর্তা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট ভোর ৫.১৫ মিঃ জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের উপর নির্মম আক্রমন করে বঙ্গবন্ধু সহ তাহার পরিবারের ১৫ জনকে হত্যা করে। দেশ তখন স্তম্ভিত হয়ে যায়। মানুষ তখন প্রায় বাকরুদ্ধ।

সারা দেশে তখন সামরিক আইন চলছে। তখন সেই হত্যাকান্ডের ব্যাপারে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি।

ঐ সময়ে জাতির পিতা হত্যাকান্ডের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে  আমি আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও বন্ধু মহলকে নিয়ে রাউজান থানা ঘেরাও করি। বন্ধু মহলের যাদের নাম এখনো স্মৃতির পটে ভেষে উঠে তাদের মধ্যে-
মোঃ দিদারুল আলম চৌধুরী (সাবেক সভাপতি, রাউজান উপজেলা আওয়ামীলীগ), ফজল হক চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, আবুল কাশেম, আলম, জাহাঙ্গীর, সাহেদ, ওবায়দুর রহমান রওসা ও নাছির সহ আরো নাম না জানা অনেকে।

জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যার প্রতিবাদী ও বঙ্গবন্ধুর অনুসারী হিসাবে অভিযুক্ত করে তৎকালিন পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলফু মিয়াকে কোন প্রকার সরকারি সুবিধা ব্যাতিরেকে বাধ্যতামূলক চাকরিচ্যুত করা হয়। এবং আমি দীর্ঘদিন স্থানীয় রাজনীতিতে আওয়ামীলীগের সাথে যুক্ত ছিলাম ১৯৮০ সালের ৩০শে মে তৎকালীন জিয়া হত্যার সাথে সংশ্লিষ্টতা দেখিয়ে তড়িঘড়ি কোর্টমার্শাল করে প্রহসন মূলক গোপন বিচারে আমার বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর কাজী মমিনুল হক কে সামরিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিগত ২৩/০৯/১৯৮১ইং ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে।

বাবার চাকুরিচ্যুতি ও বড় ভাইয়ের ফাঁসি সব মিলিয়ে আমাদের পরিবারে নেমে আসে চরম আমাবস্যার অন্ধকার। তখন ক্ষমতায় ছিল স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। দীর্ঘ ২২ বছর পর স্বাধীনতার পক্ষের দল ক্ষমতার মসনদে অধিষ্টিত হওয়ার পর আমাদের পরিবারে স্বস্তি ফিরে আসে এবং রাজনীতিতে স্বয়ংক্রীয় ভাবে অংশগ্রহণের ইচ্ছা জাগ্রত হয়। বর্তমানে আমি আমেরিকা প্রবাসী, জাতীয় ও স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে বাংলাদেশে এসে নিজ শহরে অবস্থান করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সার্বিক সহযোগিতা করি,যা আমার এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রীবৃন্ধ ভালো করেই অবগত আছেন।

রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক পরিবার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে বিবেচনাপূর্বক আসন্ন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকার মাঝি হিসাবে আমাকে মনোনয়ন দিলে, দীর্ঘ দিনের হারানো আসনটি পুনরুদ্ধার করতে পারব ইনশাআল্লাহ।

রাজনৈতিকভাবে নিগৃহীত পরিবারটির প্রতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সুদৃষ্টি প্রদর্শন করবেন বলে কুমিল্লা সিটি বাসী আশা ব্যক্ত করেন।

“মানবতার মা” মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি আমার প্রতি সু-দৃষ্টি প্রদর্শন করেন তাহলে বঙ্গবন্ধুর অনুসারী আখ্যা দিয়ে অন্যায় ভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা পিতার চাকুরীচ্যুতি ও জিয়া হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করে প্রহসনমূলক গোপন বিচারে শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা বলেই বড় ভাইয়ের ফাঁসির বেদনা কিছুটা হলেও লাঘব হবে এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি সহানুভূতি ও মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে।

তাছাড়া তিনি আরও বলেন জনাব ড. সেলিম মাহমুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটি।
জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার “থিংক ট্যাংক” আমার আপন খালাতো ভাই।
এবং আমাদের সকল আত্মীয় স্বজন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।

জননেত্রী এখন এসব বিবেচনায় আমাকে মূল্যায়ন করলে,আমি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনকে একটি মডেল সিটি কর্পোরেশন হিসেবে গড়ে তুলবো।

এবং জনগণের দ্বারগোড়ায় সিটি কর্পোরেশন এর সেবা ও  জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের মহাসড়কে রূপকল্প ভিশন-২০৪১  সফল করতে সদা সচেস্ট থাকবো।

আবারো কুমিল্লা মহানগর বাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা, “ঈদ মোবারক”।
জয় বাংলা ⛵ জয় বঙ্গবন্ধু

Leave a Reply