Site icon Doinik Bangla News

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা দাবি করে শোডাউন, পরে জানা গেল সে ভুয়া

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন বলে দাবি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক শোড়াউন করেছেন এক যুবক। ছাদখোলা গাড়িতে গলায় ফুলের মালা পরে ঘুরে বেড়িয়েছেন উপজেলায়। বহরে ছিল প্রায় অর্ধশত মোটরসাইকেলও। যদিও ছাত্রলীগের কেন্দ্র বলছে তাকে কোনো পদ দেওয়া হয়নি। বরং প্যাড ও সই জালিয়াতি করে এই সংবর্ধনা নিয়েছেন তিনি।
ঘটনাটি গত শনিবার (১৫ অক্টোবর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার। ভূইয়া একাডেমি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের এলএলবির শিক্ষার্থী শারফিন রেজা দীপ্তর বিরুদ্ধে উঠেছে এই অভিযোগ। ফেসবুক প্রোফাইলেও তিনি নিজের পরিচয় দিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নেতা হিসেবে। শুধু তাই নয়, পদ পাওয়ার পর সংবর্ধনার ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন শারফিন রেজা নিজেই।
যদিও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান জয় বলছেন, এটি ভুয়া। ছাত্রলীগের সহসম্পাদক পদে শারফিন রেজা দীপ্ত নামে কোনো পদ দেওয়া হয়নি।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সত্যিই দায়িত্ব পেয়েছেন দাবি করে শারফিন রেজা দীপ্ত বলে, ‘এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, বিষয়টি নিয়ে ভূল বুঝাবুঝি হয়েছে।’
নিজেকে কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক বলে দাবি করে শারফিন রেজা দীপ্তর দেখানো চিঠিটি সঠিক হলে তা পাঠানোর কথা সংগঠনের কেন্দ্রীয় দফতর বিভাগ থেকে। চিঠির সত্যতা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপ দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক রহিম সরদার বলেন, ‘দফতর থেকে তাকে কোনো চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে আমার জানা নেই। পাঠালে আমার না জানার কথা না। আমাদের সাধারণ সম্পাদক লেখক দা নিজেইতো বলেছেন এটা ভুয়া। প্যাড নকল করে বোধয় করেছে।’

ছাত্রলীগের সভাপতির বক্তব্যের বিষয়ে শারফিন রেজাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে বার বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা মূখী চ্যালেঞ্জের মূখোমুখি হতে হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে। এর মধ্যে দলের বিভিন্ন নেতাদের বিতর্কিত কিছু কথা বার্তা ও কর্মকান্ডে খুব বিব্রতের মধ্যে ফেলেছে দলটিকে। শেখ হাসিনা সরকার দেশ পরিচালনায় অনেক দক্ষতার পরিচয় দিলেও দলের শৃংখলা একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। অনেক এমপি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলছেন দেশের সাধারণ মানুষ। এমনকি রাজনীতিবিদদের কোয়ালিটিই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

দলের এসব ভূইপোড় নেতাদের অপকর্মের কারণে ম্লান হয়ে যাচ্ছে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সব অর্জন। আওয়ামী লীগের অনেক বিতর্কিত নেতাদের কর্মকান্ড দেখে প্রশ্ন জাগে, এরা কি আসলে আওয়ামী লীগের নেতা, নাকি দলকে ডুবানোর জন্য এরা কারো হয়ে কাজ করছে? এখনই যদি, এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশী অভিযান না চালানো হয়, আরো কঠিন চ্যালেঞ্জের মূখোমুখি হতে পারে দলটিকে। দেশের সাধারণ মানুষ, দিন দিন রাজনীতিবিদদের প্রতি ঘৃণা করা শুরু করে দিয়েছে। তাদের ভাষায়, রাজনীতিতে এখন আর আদর্শিক রাজনীতিবিদ নাই। রাজনীতির মঞ্চ হয়ে গেছে কুলুসিত মানুষের আড্ডাখানা।

বর্তমানে, এরূপ স্বঘোষিত নেতার এখন আর অভাব নাই এদেশে। শুধু শারফিন রেজা নয়, আরো অনেক রেজা এখন ক্ষমতাসীন দলে আছে, যারা দলটিকে ডুবানোর ষড়যন্ত্রে নানা চক্রান্তে লিপ্ত আছে।

Exit mobile version