চার জনের আইনজীবী সনদ বাতিল করলো বার কাউন্সিল

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ জাল শিক্ষা সনদ ও মিথ্যা তথ্যের অভিযোগে চার ব্যক্তির ‘আইনজীবী সনদ’ বাতিল করেছে আইনজীবীদের সনদ প্রদানকারী, নিয়ন্ত্রক ও তদারক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। সনদ বাতিল করা ব্যক্তিরা ঢাকা, নেত্রকোনা, টঙ্গাল আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন।
তারা হলেন আবদুল মোতালিব, মো. আসাদুজ্জামান খান, লুতফুর নাহার ও গোলাম মোহাম্মদ খান পাঠান। তাদের মধ্যে গোলাম মোহাম্মদ খান পাঠান নেত্রকোনা আদালতের সাবেক সরকারি কৌঁসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর-পিপি)।
গত ২৩ ও ২৪ আগস্ট বার কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আফজাল-উর-রহমান সনদ বাতিল সংক্রান্ত চারটি বিজ্ঞপ্তি দেন। এর মধ্যে ২৩ আগস্টে দেওয়া দুটি বিজ্ঞপ্তিতে আবদুল মোতালিব ও মো. আসাদুজ্জামান খানের সনদ বাতিলের কথা জানানো হয়। এ দুজনের মধ্যে আবদুল মোতালিব ঢাকা এবং মো. আসাদুজ্জামান খান টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।
বার কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে, আবদুল মোতালিব ১৯৯২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বার কাউন্সিল থেকে সনদ পান। কিন্তু তিনি জাল এলএলবি সনদ দাখিল করে আইনজীবী সনদ নেওয়ায় ২০০১ সালে প্রথম বার কাউন্সিল তার সনদ বাতিল করে। পরে হলফনামাসহ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট (অন্তর্ভুক্তি) পরীক্ষার ‘ফরম-এ’-এর ১৫ নম্বর কলামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ফের বার কাউন্সিল থেকে আইনজীবী সনদ পান। এবার তার সনদ বাতিল করা হয়েছে মিথ্যা তথ্যের অভিযোগে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বার কাউন্সিল রুলস ৬২(৫) ধারার বিধান অনুযায়ী বার কাউন্সিল তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। কিন্তু তার জবাব বার কাউন্সিলের কাছে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় বিধি মোতাবেক তার সনদ বাতিল করা হয়েছে। আর মো. আসাদুজ্জামান খানের সনদ বাতিলের ক্ষেত্রে এইচএসসির জাল শিক্ষা সনদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। এই ব্যক্তি ২০০৬ সালের ২১ আগস্ট বার কাউন্সিল থেকে আইনজীবী সনদ পেয়েছিলেন।
এ ছাড়া এলএলবির জাল শিক্ষা সনদের অভিযোগে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য লুতফুর নাহার ও হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার তথ্য গোপন করে মিথ্য তথ্য দেওয়ায় নেত্রকোনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও সাবেক সরকারি কৌঁসুলি গোলাম মোহাম্মদ খান পাঠানের সনদ বাতিল করা হয়। গত ২৪ আগস্ট এ দুজনের সনদ বাতিলের বিজ্ঞপ্তি দেয় বার কাউন্সিল। লুতফুর নাহার ২০১২ সালের ২ এপ্রিল ও গোলাম মোহাম্মদ খান পাঠান ১৯৯৭ সালের ৬ আগস্ট আইনজীবী সনদ পেয়েছিলেন। গোলাম মোহাম্মদ খান পাঠান ১৯৯৫ সালে একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হন। অথচ বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট পরীক্ষার ফরমে তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই এবং কোনো অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত নন বলে মিথ্যা হলফনামা দিয়েছেন। এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর পর তাদের জবাব গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় সনদ বাতিল করার কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। তবে বার কাউন্সিলের সনদ বাতিলের আদেশ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করবেন বলে জানিয়েছেন আবদুল মোতালিব ও লুতফুর নাহার।
আবদুল মোতালেব  বলেন, ‘শিক্ষা সনদের বিষয়ে আমি কোনো মিথ্যা তথ্য দিইনি। আমাকে যখন কারণ দর্শানো হলো, তখন উপযুক্ত নথিসহ আমি এর জবাব দিয়েছি। কিন্তু কাউন্সিল সেসব আমলে না নিয়ে সনদ বাতিল করেছেন। আমি এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করব। ’ লুতফুর নাহারও একই কথা বলেছেন। বাকি দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply