‘তারা কোন মুখে ভোট চায়?’

বিএনপি-জামায়াতকে উদ্দেশ করে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে ৪৬ বছর পর কেন এই মানুষ পুড়িয়ে মারার দৃশ্য দেখছি? যারা হিংসার আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারে, তারা ঘৃণার আগুনে পুড়ে মরছে। যারা মানবিকতাকে অপমান করেছে হিংস্র দানবের মতো, যারা নারকীয় বর্বরতায় মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, বাংলার মাটিতে তারা এখন কোন মুখে ভোট চায়?’
আজ রোববার সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনার উপকমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই বর্বরতার প্রতিভূদের এ দেশের মানুষ সমর্থন করে না, করবে না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই সাম্প্রদায়িক ও বর্বর অপশক্তির পরাজয় হবে। অসাম্প্রদায়িক শুভ শক্তির কাছে তাদের পরাজয় অনিবার্য। আজকে তাই আমি আমাদের নেতা-কর্মীদের বলব, ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিতে হবে এই বর্বর অপশক্তির বিরুদ্ধে। বিএনপি নামক এই অপশক্তি গণতন্ত্রের মুখোশ পরে, কখনো মানবতার মুখোশ পরে, ধোঁকা দিচ্ছে। তারা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে জনগণের সামনে। এটাই হোক আমাদের শপথ।’
এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে জাতীয় চিত্রশালার ৬ নম্বর গ্যালারিতে ফিতা কেটে ‘বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের খণ্ডচিত্র’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী। দশম জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যে সহিংসতা হয়, তা এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। সেখানে ২৫০টির অধিক ছবি ও একটি তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে। আগামীকাল বিকেল পাঁচটায় প্রদর্শনী শেষ হবে।
প্রদর্শনী নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি বর্বরতার চিহ্ন দেখে। এটা ঠিক ১৯৭১ সালের মতো ঘটনা। সে সময় পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে আমরা পরাজিত করেছি। কিন্তু তাদের দোসররা এখনো বাংলার মাটিতে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। এখনো এই স্বাধীন দেশে রক্তের হলি খেলা খেলছে।’
আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে বিএনপি-জামায়াতের যত হামলা-সহিংসতা, এগুলো তার ছবি। এগুলো ছিল জোর করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা। এগুলো একেবারেই পাকিস্তানি ধারার পরিকল্পনা। এগুলো রাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ, রাষ্ট্রীয় সত্তার ওপরে আক্রমণ। পাকিস্তান ১৯৭১ সালে যা করেছিল, তারই প্রতিচ্ছবি এই সময়টাতে বিএনপি-জামায়াত করেছিল। এটির একটি প্রচারণা দরকার। প্রচার করা হলেই বিএনপি-জামায়াতের চেহারা সবাই জানতে পারবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় কম, নির্বাচনের আর খুব বেশি দিন নেই। সময় আর নেই। তাই জনমত তৈরি করতে এখনই এগুলো প্রচার করতে হবে।’

আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশে রাজনীতির নামে বিএনপি-জামায়াত সহিংসতায় লিপ্ত হয়েছে। তারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সমসাময়িক বিশ্বে পৃথিবীর কোথাও রাজনীতির জন্য, সরকার পতনের লক্ষ্যে ক্ষমতায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে এমন সহিংসতা হয়নি। এটা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এই প্রদর্শনীতে সেই সহিংসতার খণ্ডচিত্র দেখানো হয়েছে।

আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। আলোচনায় পাঁচজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি তাঁদের স্বজন হারানো ও সহিংসতায় শিকারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এই পাঁচজনকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার চেক দেওয়া হয়।

Leave a Reply