Site icon Doinik Bangla News

জিয়া পরিবারে কোনঠাসা তারেক জিয়া

বিএনপি যেমন একদিকে রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে আছে, দলে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে ঠিক তেমনি পরিবারের মধ্যেও তারেক জিয়া কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। তারেক জিয়ার স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থ আত্মসাৎ এবং পরিবারের অন্য সকলকে বঞ্চিত করে সকল সম্পত্তি নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রাখার প্রতিবাদে এখন জিয়া পরিবার একাট্টা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার বোন সেলিনা রহমান এবং প্রয়াত কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান এখন তারেকের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন যে, জিয়ার উত্তরাধিকার তারেক একা না, একাই তিনি সমস্ত কিছু ভোগ করতে পারেন না। বিএনপিতে যেমন তাদের অংশীদারিত্ব রয়েছে, তেমনি অংশীদারিত্ব রয়েছে বেগম খালেদা জিয়া সম্পত্তিতে। আর এ কারণেই এখন তারেক পরিবারের মধ্যে কোণঠাসা হয়েছেন। তারেকের বিরুদ্ধে তার পরিবারের সদস্যদের প্রধান অভিযোগ হলো যে, তিনি বিএনপিকে এককভাবে ব্যবহার করছেন এবং বিএনপি একটি লাভজনক ব্যবসা। বিএনপিতে গতবছর মনোনয়ন বাণিজ্য করে তারেক জিয়া ৫০০ কোটি টাকার বেশি আয় করেছেন বলে জিয়া পরিবারের সদস্যদের ধারণা। আর এই টাকার কোনটাই বেগম খালেদা জিয়াকে বা তার আত্মীয়স্বজনকে দেওয়া হয়নি। এমনকি ওই নির্বাচনের জন্য সৈয়দা শর্মিলা সিঁথি কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিলেও তার মধ্যে থেকে মাত্র দুটি আসনে প্রার্থী দেয়া হয়, যেখান থেকে শর্মিলা সামান্য কিছু অর্থ উপার্জন করতে পেরেছেন। তাছাড়া শামীম এস্কাদারের কোনো কথাই ওই মনোনয়নে শোনা হয়নি। এখন তারেক জিয়া যে কমিটিগুলো করছেন সেই কমিটিগুলো থেকে তিনি বিপুল পরিমাণে আয় করছেন, যে আয়ের কোনো অংশই তিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের দেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান চিকিৎসা ব্যয় এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটানোর জন্য তারেক জিয়া কোনো টাকা-পয়সা দিচ্ছেন না। অথচ তিনি লন্ডনে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। এ নিয়ে প্রথম কথা বলেছেন সৈয়দা শর্মিলা সিঁথি। বেগম খালেদা জিয়া সর্বশেষ অসুস্থ হলে সিঁথি ঢাকায় আসেন এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত খোঁজখবর নেন। এসময় মোসাদ্দেক আলী ফালু বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা এবং আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্য বেশকিছু টাকা পাঠান বলে জানা গেছে। অন্যদিকে সিঁথি তারেক জিয়ার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ব্যয়সহ অন্যান্য খরচের জন্য ঢাকা চাইলেও তারেক জিয়া কোনো অর্থ দেননি। বরং তারেক জিয়া জানিয়ে দেন যে, তার মার কাছে প্রচুর টাকা রয়েছে, টাকা নিয়ে তাদেরকে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে না। এই বক্তব্য শামীম এস্কান্দারের কানে আসলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এবং তিনি তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। শামীম এস্কান্দার তারেক জিয়াকে বলেছেন যে, তারেক জিয়ার জন্যই বেগম খালেদা জিয়ার এই পরিণতি হয়েছে। কিন্তু তারা মুখে যাই বলুক না কেন শেষ পর্যন্ত তারেক জিয়ার কাছ থেকে তারা একটি কানাকড়িও আদায় করতে পারেননি।

 

 

২০১৬ সাল থেকে বেগম খালেদা জিয়ার যে কারাজীবন সেই কারাজীবনের সময় তারেক বেগম খালেদা জিয়ার তো কোনো খোঁজ-খবরই নেননি, তার জন্য কোনো আর্থিক সহযোগিতা দেয়নি, এমনকি বিএনপি থেকে তিনি যে আয় উপার্জন করেছেন সেটির ভাগও জিয়া পরিবারের কাউকে দেননি। জিয়া পরিবারের অন্যতম সদস্য বেগম খালেদা জিয়ার ছোট বোন সেলিনা এনিয়ে তারেক জিয়ার স্ত্রী জোবাইদার সঙ্গে কথা বলেছেন, কিন্তু জোবাইদা বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। বেগম খালেদা জিয়ার ভাই এবং বোনেরা বলছেন যে, খালেদা জিয়ার সমস্ত দেখভাল করছেন তারাই। কিন্তু তারপরও তারা বেগম খালেদা জিয়ার সম্পত্তির কোনো কিছুই পাচ্ছেন না। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে বেগম খালেদা গ্রেপ্তার হওয়ার আগে সর্বশেষ লন্ডনে যখন গিয়েছিলেন তখন তার গোপন সম্পত্তির একটি বড় অংশ তারেক জিয়াকে দিয়ে দিয়েছেন। বাকি অংশটুকু মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে। তারেক জিয়া এখন এই সম্পত্তির ভাগ কাউকে দিতে চাইছেন না। এনিয়েই পরিবারের মধ্যে অশান্তি দানা বেঁধে উঠেছে। আর এই প্রেক্ষাপটে এখন জিয়া পরিবারে জ্বলছে অশান্তির আগুন। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, শামীম এস্কান্দার, সিঁথি এবং সেলিনা রহমান একজোট হয়েছেন যে বিএনপিতে এখন তাদের কর্তৃত্ব দরকার, তারেক জিয়ার একক কর্তৃত্বে বিএনপি চলতে পারে না। কারণ, বিএনপি হলো এখন তাদের উপার্জনের সবচেয়ে বড় দোকান।
সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার
Exit mobile version