দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিচার হবে গণ আদালতে

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিচার হবে গণ আদালতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ। আজ শনিবার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদে চট্টগ্রাম চেম্বার আয়োজিত এক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাবেক এই চেম্বার সভাপতি।

ভূমি ব্যবস্থাপনায় ‘ডিজিটাল কর ব্যবস্থা’ প্রবর্তন করায় ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কারে সেরা প্রকল্প হিসেবে বিজয়ী হয়। আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ এই অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীকে সংবর্ধনা দেয় চট্টগ্রাম চেম্বার।

সংবর্ধনা পাওয়া ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘প্রযুক্তিগত বিপ্লবের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের কাজের পদ্ধতি এবং পলিসি রিফর্ম নিয়ে কাজ করেছি, যা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। ‘‘দলিল যার জায়গা তার’’ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ভূমি দখলদারদের দৌরাত্ম্য ও প্রকৃত খতিয়ানভূক্ত মালিকদের রক্ষায় ‘‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২১’’ প্রণয়ন হচ্ছে। এ আইন শিগগির জাতীয় সংসদে উপস্থাপন হবে।’

মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে সকল ব্যক্তিগত স্বার্থের উর্ধ্বে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চলমান ডিজিটাল সার্ভের ফলাফল খুবই ভালো। আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল সার্ভের পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন করবেন। এর মাধ্যমে সারা দেশের ভূমিবিষয়ক সব তথ্য ও সংকট দূর হবে।’ চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি বাণিজ্য মেলার জন্য স্থায়ী ভেন্যুর আবশ্যকতা উপলব্ধি করে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য চট্টগ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন অভিযোগ করে এম এ লতিফ বলেন, ‘দুর্নীতির মহাক্ষেত্র বানাতে সরকারের কর্মকর্তারা এখানে (চট্টগ্রামে) আসেন। এটাকে তারা মাইকেলের জেলা মনে করেন। কিন্তু চিত্র পাল্টে গেছে। এক সময় এখানের মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করত, চাকরিতে মনোযোগ ছিল না। এখন চট্টগ্রামের মানুষের চিন্তার পরিবর্তন হয়েছে। পড়ালেখায় মনোযোগ দিয়েছে, উচ্চপদে চাকরি করছে।’

তিনি বলেন, ‘এটা দুর্নীতিবাজ ওই কর্মকর্তাদের জন্য একটা বড় মেসেজ (বার্তা)। টাকা খরচ করে এখানে পোস্টিং নেয়। এরপর লুটপাটের ফিল্ড (ক্ষেত্র) হিসাবে ব্যবহার করে। টাকা খরচ করে চট্টগ্রাম নয় দুবাইতে আসে পয়সা কামাইতে। এ জন্য চট্টগ্রামের মানুষদের ওপর নির্যাতন করে।’

দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অফিস ঘেরাও করে গণআদালতে তাদের বিচার করার হুঁশিয়ারি দিয়ে বন্দর-পতেঙ্গা আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘সিভিল সোসাইটি নিয়ে তাদের দুর্নীতি তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। দুর্নীতি বন্ধে ওই কমিটি তাদের ট্রেকিং করবে। দুর্নীতির প্রমাণ পেলে অফিস ঘেরাও করে গণআদালতে বিচার করব। তারপর দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে তুলে দেবো।’

চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘বর্তমান ভূমিমন্ত্রী চট্টগ্রাম চেম্বারের দায়িত্ব থাকাকালীন বন্দর ব্যবস্থাপনা প্রাইভেটাইজেশনে নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। ভূমিমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভূমির যে ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে তাতে সমস্ত ভূমি একটি প্ল্যাটফর্মে চলে আসবে।’

চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলাম দোভাষ, চেম্বার সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, এস এম আবুল কালাম, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এম এ ছালাম, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, চেম্বার পরিচালক এ কে এম আক্তার হোসেন, হাসনাত মো. আবু ওবাইদা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Leave a Reply