Site icon Doinik Bangla News

পুরুষ দলে নারী কোচ…বাংলাদেশেও!

পর্তুগালের হেলেনা ডি কস্তাকে চেনেন না বাংলাদেশের ডালিয়া আক্তার। কিন্তু একটা জায়গায় মিলে গেছেন দুজনে। ফ্রান্সের পেশাদার ফুটবলে পুরুষ দলের (ক্লারমঁত ফুত, ২০১৪) প্রথম নারী কোচ হেলেনা। ডালিয়া বাংলাদেশের পুরুষ হ্যান্ডবল দলের প্রথম নারী কোচ। যশোরের শামস উল হুদা স্টেডিয়ামে পরশু শেষ হয়েছে এক্সিম ব্যাংক ২৭ তম জাতীয় পুরুষ হ্যান্ডবল। ডালিয়া এই প্রতিযোগিতায় ছিলেন ঢাকা জেলার কোচ।

ফুটবলার, ক্রিকেটার, ভলিবল ও হ্যান্ডবল খেলোয়াড়-অনেক পরিচয় ডালিয়ার। জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন। চোটের কারণে ফুটবল ছেড়ে দিয়েছেন। ভলিবল ও ক্রিকেটেও অনিয়মিত। তবে হ্যান্ডবলে দাপটের সঙ্গেই খেলে চলেছেন। পাশাপাশি হ্যান্ডবলের কোচিংও চালিয়ে যাচ্ছেন।

পুরুষ দলে নারী কোচ হিসেবে কাজ করা কতটা চ্যালেঞ্জের? ডালিয়ার হাসিমাখা উত্তর, ‘আমি ঢাকার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ছেলেদের প্রতি সপ্তাহে অনুশীলন করাই। যেহেতু ঢাকা জেলা অনেক দিন জাতীয় প্রতিযোগিতায় দল গড়ে না, ফেডারেশন তাই দল গড়ে তোলার দায়িত্ব দিয়েছে আমাকে। ছেলেরা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে।’

ডালিয়ার কাছে মেয়ে ও ছেলে খেলোয়াড়ের মধ্যে ভেদাভেদ নেই, ‘খেলোয়াড় তো খেলোয়াড়ই। তা ছাড়া ফেডারেশন মেয়ে বলে আমাকে অবহেলা করেনি। আমার যোগ্যতার মূল্য দিয়েছে। আমার কাজে সবাই খুশি।’

তবে ছেলেদের সঙ্গে ম্যানেজার মিটিংয়ে যোগ দেওয়াটা ছিল ডালিয়ার জন্য অন্য রকম অভিজ্ঞতা, ‘ম্যানেজার মিটিংয়ে সবাই আমার সাহসের প্রশংসা করেছেন। পুরুষদের টুর্নামেন্টে মেয়ে কোচ হিসেবে যে মূল্যায়ন পেয়েছি, তাতে ভালো লেগেছে।’ এর জন্য একটা কৃতিত্ব হ্যান্ডবল ফেডারেশনেরও প্রাপ্য বলে মনে করেন ডালিয়া, ‘আমাদের হ্যান্ডবল ফেডারেশন কতটা মুক্তমনা, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সবাই আমাকে উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, তুমি পারবে। মহিলা দলে কোচ যদি ছেলেরা হতে পারে, তাহলে পুরুষ দলে কেন মহিলা কোচ হতে পারবে না?’

পুরুষ ফুটবলারদের সঙ্গে কাজ করাটা কখনো কঠিন বলে মনে হয়নি ডালিয়ার, ‘কখনো কেউ মনে করেনি যে আমি মহিলা কোচ। এই দলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রও ছিল। সবাই আমার নির্দেশনা ভালোভাবে পালন করেছে।’

জাতীয় প্রতিযোগিতায় পঞ্চম হয়েছে ঢাকা। এ নিয়ে কষ্ট নেই ডালিয়ার, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা কম। তবে এখান থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’

বিজেএমসির খেলোয়াড় ডালিয়া ঢাকার সাউথ ব্রিজ স্কুলের ক্রীড়াশিক্ষক। কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখছেন মাদারীপুরের তরুণী, ‘পেশা হিসেবে কোচিংটাকে নেওয়ার ভালো সুযোগ আছে এখানে। আমাকে দিয়ে যেহেতু হ্যান্ডবলে একটা যুগের সূচনা হয়েছে, আশা করি এখন অন্যরাও এগিয়ে আসবে। এখন মানুষের মানসিকতারও বদল হচ্ছে।’

Exit mobile version