Site icon Doinik Bangla News

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, বন্ধ বই উৎসব

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম নগরের একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘যৌন হয়রানি’র অভিযোগ এনে তাকে ‘অবরুদ্ধ’ করে রেখে বিক্ষোভ দেখিয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ সময় বই উৎসব বন্ধ রেখে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বই উৎসব বন্ধ রেখে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। তারপর প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে তারা। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন কিছু অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষার্থীরাও। এ সময় তাদের হাতে প্রধান শিক্ষক মো. আলউদ্দিনের অপসারণের দাবিতে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ডও দেখা যায়।

‘তদন্ত করে শিক্ষক মো. আলউদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’- স্থানীয় চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুর এমন আশ্বাসে ছাত্রীরা ঘন্টা দুয়েক পর শান্ত হয় এবং ক্লাসরুমে ফিরে যায়।

এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বলেন, তাকে ‘বদলি’ করার জন্য বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন শিক্ষক ছাত্রীদের ‘ইন্ধন’যোগাচ্ছে।

ছাত্রীদের অভিযোগ, ‘প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন ক্লাস রুম থেকে ছাত্রীদের নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে তাদের বিভিন্নভাবে ‘যৌন নিপীড়ন’ করেন।

জানা গেছে, ছাত্রীদের ‘যৌন হয়রনি’র অভিযোগে এর আগেও একবার মো. আলাউদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং অন্য স্কুলে বদলি করা হয়েছিল বলে শিক্ষার্থীরা জানান।

কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেছে, “স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তোলার সময় শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনের হাতে ছাত্রীরা ‘হয়রানি’র শিকার হয়েছে। কেউ তার পাশে ছবি তুলতে দাঁড়ালে মাস্ক খুলে ছবি তোলার জন্য উনি জোরাজোরি করেন এবং গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন। কোনো ছাত্রী সেটার প্রতিবাদ করলে তাকে নানাভাবে হুমকি দিতেন।”

বিক্ষুব্ধ এক শিক্ষার্থী বলে, “২০১৩ সালে এক ছাত্রীকে ‘যৌন হয়রানি’র অভিযোগে এই শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরে ওই ছাত্রী বিদেশ চলে যাওয়ায় আবার চাকরিতে ফিরে আসেন তিনি।”

বিক্ষোভ চলার সময়ে স্থানীয় চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু স্কুলে এসে ছাত্রীদের সাথে কথা বলেন। সে সময় মাইকে ছাত্রীদের তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে মেয়র রোজাউল করিমের সাথে তার কথা হয়েছে। মো. আলাউদ্দিনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নতুন নারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন করে আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মো. আলাউদ্দিন পরে সাংবাদিকদের বলেন, “সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না এনে আমার বিরুদ্ধে বায়বীয় কিছু অভিযোগ করা হচ্ছে, যাতে স্কুলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এবং মিডিয়ায় ফোকাস করে মেয়র মহোদয় বিরুক্ত হয়ে আমাকে বদলি করে দেন।”

কেন তাকে বদলি করার চেষ্টা করা হতে পারে– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আলাউদ্দিন বলেন, “কিছু লোকের ইলিগ্যাল ডিমান্ড আছে। তাদের সুবিধার জন্য তারা এটা করছে।”

Exit mobile version