Site icon Doinik Bangla News

ফেঁসে যাচ্ছেন ইউনূস: তৎপর যুক্তরাষ্ট্র

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফেঁসে যাচ্ছেন। তিন হাজার কোটি টাকার মানিলন্ডারিং তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে একাধিক সুস্পষ্ট প্রমাণ হাতে পাচ্ছে বলে জানা গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্র বলছে যে, তারা বিষয়গুলো আরও খতিয়ে দেখছে, গভীরভাবে বিশ্লেষণ করছে এবং তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করছে। এই সমস্ত যাচাই-বাছাই করার পর চূড়ান্তভাবে বোঝা যাবে যে, এই মানিলন্ডারিং প্রক্রিয়ার সঙ্গে ড. ইউনূসের সংশ্লিষ্টতা কতটুকু আছে এবং তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য যে, গ্রামীণ টেলিকম নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয় ড. ইউনূসের উদ্যোগে। ড. ইউনূস ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই গ্রামীণ টেলিকমের মাধ্যমে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে যথেচ্ছাচার ভাবে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত এই টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে যে, গ্রামীণ টেলিকমের টাকা ইউনূস ফাউন্ডেশনে সরানো হয়েছে। আবার ইউনূস ফাউন্ডেশন থেকে সেই টাকা ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত একাউন্টে রাখা হয়েছে। অন্তত তিনশ কোটি টাকার হদিস পাওয়া গেছে যে ঢাকা ইউনূসের স্ত্রীর একাউন্টে হস্তান্তর করা হয়েছে ইউনূস ফাউন্ডেশন থেকে। আবার ইউনূসের মেয়ের একাউন্টেও অন্তত ২৫০ কোটি টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশের এক হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ড. ইউনূসের ট্রাস্ট ইউনূস ফাউন্ডেশনে হস্তান্তর করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের টাকা এভাবে ইউনূস ফাউন্ডেশনে হস্তান্তর করা যায় কিনা, সেটি নিয়ে আরও পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই ইউনূস ফাউন্ডেশন গঠন করেন। ইউনূস ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যালয়ে। এই ফাউন্ডেশন দেশে-বিদেশে ইউনূসের ইমেজ বৃদ্ধি এবং ইউনূসের পক্ষে আন্তর্জাতিক লবিং করার জন্য কাজ করে। সারা বিশ্বে বিভিন্ন দেশে ইউনূস যে সময় বক্তৃতা দেন, সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন সেগুলোর তদারকি এবং ব্যবস্থাপনা করার দায়িত্ব ইউনূস ফাউন্ডেশনের। এই ফাউন্ডেশন ড. ইউনূসের ওপর বিভিন্ন রকম গবেষণা করে এবং সামাজিক ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে পরামর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ইউনূস ফাউন্ডেশনকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ঘোষণা করা হলেও এই প্রতিষ্ঠানে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অর্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই টাকা কে কারা কিভাবে পাঠিয়েছে সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ইউনূস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা এবং পরামর্শ দিয়ে যে টাকা পান সেটি ইউনূস ফাউন্ডেশনের একাউন্টে জমা হয়। কিন্তু গ্রামীণ টেলিকম থেকে ইউনূস ফাউন্ডেশনের একাউন্টে কেন টাকা জমা হলো, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। এটি অনুসন্ধান করলেই টাকা পাচারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাছাড়া গ্রামীণ টেলিকমের কিছু লভ্যাংশের টাকা বাংলাদেশের একাউন্টে জমা হয়নি, সরাসরি জমা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাউন্টে এবং সুইডেনের অ্যাকাউন্টে। এই সমস্ত টাকাগুলো ড. ইউনূস তার ব্যক্তিগত নামে পরবর্তীতে উত্তোলন করেছেন এবং বিভিন্ন ভাবে খরচ করেছেন বলেও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রগুলো বলছে যে, ৩ হাজার কোটি টাকা যে পাচার হয়েছে এটি মোটামুটি তারা নিশ্চিত। তবে টাকা পাচারের ক্ষেত্রে কে কিভাবে ভূমিকা রেখেছেন এবং কার কার দায় দায়িত্ব কতটুকু, সে বিষয়টি নিয়ে তারা আরও খতিয়ে দেখছেন। উল্লেখ্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এবং গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা দিয়ে তিনি অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলো ড. ইউনূসের একক কর্তৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশের টাকা এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যথেচ্ছাচার ভাবে সরানো হয়েছে এবং সেই টাকাগুলো থেকে আবার ড. ইউনূস, তার স্ত্রী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যের নামে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা হয়েছে, সেই মামলায় বেগম জিয়া দণ্ডিত হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল ট্রাস্টের টাকা তিনি এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে হস্তান্তর করেছেন। এভাবে ট্রাস্টের টাকা হস্তান্তর করা যায় না। একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঠিক সেই একই অপরাধে অপরাধী। আর ইউনূস যে এভাবে ফেঁসে যাচ্ছেন এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। আর এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের ছুটে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন যে, এটি ছিল স্রেফ সৌজন্য সাক্ষাৎ। কিন্তু একাধিক কূটনৈতিক সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে যে, দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে একটি সম্পর্ক তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। ভবিষ্যতে যেন ইউনূসকে বাঁচাতে তারা প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুর্নীতি সম্মেলনে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইউনূসকে বাঁচাতে এখন মার্কিন দূতাবাস কাজ শুরু করেছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সেই কাজের অংশ হিসেবেই পিটার ডি হাস দুর্নীতি দমন কমিশনে ছুটে গিয়েছিলেন বলেই বিভিন্ন মহল মনে করছে।
সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার
Exit mobile version