‘বিএনপির কাজ হচ্ছে দিনের বেলায় ‘পদযাত্রা’, রাতের বেলায় ‘এম্বেসি যাত্রা’: তথ্যমন্ত্রী

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না, পারে শুধু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে, বিএনপির কতটুকু শক্তি আমাদের জানা আছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির কাজ হচ্ছে দিনের বেলায় ‘পদযাত্রা’, রাতের বেলায় ‘এম্বেসি যাত্রা’। রাতের বেলা বিভিন্ন এম্বেসিতে গিয়ে কূটনীতিকদের হাতে পায়ে ধরে পদলেহন করা- এই হচ্ছে তাদের কাজ। কিন্তু এদেশে কোনো কূটনীতিক কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারে নাই, পারবেওনা।’

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দেশব্যাপী ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যে’র প্রতিবাদে ফতেহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদের পরে, শীতের পরে, গ্রীস্মের পরে যখন আম পাকে কিংবা বার্ষিক পরীক্ষার পরে আন্দোলন করতে করতে বিএনপির ১৪ বছর কেটে গেছে। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে এতদিন আত্মগোপনে ছিল তাদেরকে গ্রামেগঞ্জে এনে আবার অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই সমগ্র দেশে পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু রাজনীতির নামে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে আমরা দিতে পারি না।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণের রায় নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে আবার সরকার গঠন করবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বুঝতে পেরেছে আগামী নির্বাচনেও তাদের কোন সম্ভাবনা নাই, তাই তাদের নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে। এখন সবাইকে নিয়ে ঐক্য করে মাঝেমধ্যে বলে ৩২ দল, কখনো ১২ দল, কখনো ২২ দল, আবার বলে ৫৪ দল। আসলে বিএনপির জোট যে কত দলের, সেটা বলা মুশকিল। ২২ দল এবং ১২ দল মিলে ঢাকা শহরে এক জায়গায় সমাবেশ করলে সেখানে মানুষ পাওয়া যায় পঞ্চাশ জন। আর সাংবাদিক থাকে এক শ’ জন। এই হচ্ছে তাদের সমাবেশ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আর বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান তো নির্বাচন করতে পারবেন না, তাই তারা নির্বাচনে গিয়ে মির্জা ফখরুলকে নেতা বানাতে চান না। বিএনপির পতাকাটা তারা মির্জা ফখরুল কিংবা অন্য কারো হাতে তুলে দিতে চান না। সেই কারণেই তাদের নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে। নির্বাচন বানচাল করার জন্য অতীতে যেমন ষড়যন্ত্র করেছে এখনও সেই ষড়যন্ত্রের পথেই হাঁটছে বিএনপি।

হাছান মাহমুদ সাংবিধানিক যুক্তি দিয়ে বলেন, আপনারা নির্বাচনে যাবেন না, আবার সরকার হটাতে চাইবেন সেটি তো হয় না। নির্বাচনে আসুন, নির্বাচনে এসে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। জনগণ যাদেরকে নির্বাচিত করবে, তারাই দেশ পরিচালনা করবে।

ফতেহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ শামীমের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান। অন্যান্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুছ গণি চৌধুরী, উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল ইসলাম, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভির হোসেন চৌধুরী তপু, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাসন্তি প্রভা পালিত প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

পরে বিকেলে বাংলা একাডেমীতে তিন গবেষণাগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় অধ্যয়ন অনুষদ থেকে পিএইচডি অর্জনকারী সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য ড. সৈয়দ মো. আমিনুল করিম ও ব্যাংকার ড. মো. আরিফুল ইসলাম প্রণীত তিনটি গবেষণা গ্রন্থের মোড়ক উন্েেমাচন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শনিবার (১১ রেফব্রুয়ারি) বিকেলে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে রাজধানীতে চলমান অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমীর কবি জসিম উদ্দিন ভবন মিলনায়তনে এই বই তিনটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী চট্টগ্রাম থেকে অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন।

ঢাবি’র সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক সম্মানিত অতিথি এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। গ্রন্থত্রয় প্রকাশক হাক্কানি পাবলিশার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

এ সময় সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ড. বেনজীর আহমেদ প্রণীত ‘বাংলাদেশ পুলিশ ইন ইউএন পিসকিপিং ফোর্স’, ড. সৈয়দ মো. আমিনুল করিম প্রণীত ‘ট্যাক্স রেভিনিউ ইন বাংলাদেশ’ ও ড. মো. আরিফুল ইসলাম প্রণীত ‘নন-পারফর্মিং লোনস ইন বাংলাদেশ’ গ্রন্থ তিনটি আগ্রহী শিক্ষার্থী ও গবেষকদের অনেক কাজে লাগবে।

Leave a Reply