র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা ও জ্বালানি ইস্যুতে আলোচনা হবে

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশন এবং রানি এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা ছাড়ছেন। রানির শেষকৃত্যানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রী আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লন্ডনে অবস্থান করবেন। এর পরের দিন জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি যাবেন নিউইয়র্ক। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। এ ছাড়াও জাতিসংঘের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা মহামারীর মতো ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর লন্ডন ও নিউইয়র্ক সফর উপলক্ষে গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ড. মোমেন বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে করোনা মহামারী, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সংকটের পাশাপাশি খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, বহুপাক্ষিকতাবাদ, টেকসই আবাসন, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল অবকাঠামো গঠনের বিষয়গুলো আলোচনায় প্রাধান্য পাবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল গুরুত্বপূর্ণ এসব ইস্যুতে আমাদের জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কিত অগ্রাধিকার বিষয়গুলো তুলে ধরবে।’ প্রধানমন্ত্রীর সফরে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আসবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই আসবে, এটা আমরা সবসময় তুলি। এতে কোনো ব্যত্যয় হবে না।’ র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা কতটুকু যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘সেটি আমি জানি না। যারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা কিছু লোক বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিস্তারিত বক্তব্য দেননি যে, কী কী কারণে তারা নিষেধাজ্ঞাটি আরোপ করল। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) মোটামুটি বলে দিয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু কী কারণে দিল সেটি আমরা জানতে চাই। এটি হলে আমরা আরও ভালোভাবে বিষয়টি সম্পর্কে পদক্ষেপ নিতে পারতাম। কিন্তু তারা নির্দিষ্ট করে বলেননি যে, এ কারণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’
মিয়ানমার থেকে আর কোনো গোলা বাংলাদেশে পড়বে না বলে দেশটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ড. মোমেন বলেন, ‘মিয়ানমারে কিছুটা সংঘাত হচ্ছে। এটি জানার পর থেকে আমাদের দিক থেকে যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা সেটি নিয়েছি। প্রথমত আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেব না। আমাদের বর্ডার পুলিশসহ অন্যান্য ফোর্সকে ইতোমধ্যে সতর্ক করে রেখেছি এবং তারা পুরোপুরি সতর্কাবস্থায় রয়েছে। আমরা মিয়ানমার সরকারকে বারবার অনুরোধ করেছি, তোমাদের গোলা যেন আমাদের দিকে না আসে। আমাদের এখানে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মিয়ানমার আমাদের বক্তব্য শুনেছে। আমরা এ বিষয়ে তাদের বলেছি, তোমরা এ ব্যাপারে সতর্ক হবে। তারা তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছে। আমরা আশা করি মিয়ানমার থেকে আর লোক আসবে না, আমরা বর্ডার সিল করে দিয়েছি।’
এদিকে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারত সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত যাওয়া হয়নি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। সে সময় ড. মোমেনের শারীরিক অসুস্থতার কথা বলেছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তবে এবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন ও রানি এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ ঢাকা ছাড়ছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ যাচ্ছি। সবই ওপর ওয়ালার ইচ্ছা। ইউ নেভার নো, ইনশাআল্লাহ হঠাৎ করে অসুবিধে হয়ে যায়, মৃত্যুও হতে পারে।’ তার ভারত সফরে না যাওয়া নিয়ে অনেক রটনা আছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ বাড়িয়ে বলে। আমি আশা করি, তারা বুঝতে পারবে।’ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন বলে জানান তিনি।

Leave a Reply