২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ রাষ্ট্রীয় ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ (ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা সিআইআই) ঘোষণা করার সঙ্গে জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার বিঘ্নিত হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারের সঙ্গেও এটি সাংঘর্ষিকও নয়। এক বিবৃতিতে এই কথা জানিয়েছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।

রবিবার (৯ অক্টোবর) আইসিটি বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, সম্প্রতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ঘোষিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো থেকে কোনও ধরনের তথ্য পাওয়া যাবে না বলে বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে কিছু রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠান। তবে এ ব্যাপারে সরকারের বক্তব্য হলো, ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ হচ্ছে সরকার ঘোষিত এমন কোনও বাহ্যিক বা ভার্চুয়াল তথ্য পরিকাঠামো, যা কোনও তথ্য-উপাত্ত বা কোনও ইলেকট্রনিক তথ্য নিয়ন্ত্রণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চারণ বা সংরক্ষণ করে। যা ক্ষতিগ্রস্ত বা সংকটাপন্ন হলে জননিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বা জনস্বাস্থ্য, জাতীয় নিরাপত্তা বা রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বা সার্বভৌমত্বের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮-এর ১৫ ধারার বিধান অনুসারে সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দিয়ে এসব বিষয় বিবেচনা করে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষণা করেছে।
ওইসব প্রতিষ্ঠানে সরকার ও জনগণের গুরুত্বপূর্ণ ও আর্থিক তথ্যাবলি সংরক্ষিত থাকায় এদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো আইটি অডিট সম্পন্ন, যথাযথ অবকাঠামো নির্মাণ, সঠিক মানসম্পন্ন নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণ, যথাযথ স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ব্যবহার, দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন মানবসম্পদ নিয়োগ ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিকাঠামোগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনসাধারণকে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা পৌঁছে দেওয়াই এই ঘোষণার প্রধান উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, পৃথিবীর অনেক দেশ, যেমন- ভারত, কোরিয়া, যুক্তরাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো চিহ্নিত আছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আরও জানায়, রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ওই পরিকাঠামোর নিরাপত্তা সামান্যতম বিঘ্নিত হলে জনগণের বিপুল ক্ষতির কারণ হবে। এর সঙ্গে জনগণের তথ্য প্রাপ্তি সংক্রান্ত অধিকার বিঘ্নিত হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই বা তথ্য প্রাপ্তির অধিকারের সঙ্গে এটি সাংঘর্ষিক নয়। ফলে বিভিন্ন মহলের এ বিষয়ে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে।

২৯টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হলো, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড, সেতু বিভাগ, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, জাতীয় ডাটা সেন্টার- বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইমিগ্রেশন-বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশ, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।

 

Leave a Reply