এখনো চালু হয়নি অনেক স্টল

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় (ডিআইটিএফ) ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু বিদেশি প্যাভিলিয়ন ও স্টল। কিন্তু এবারের মেলার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও বেশির ভাগ বিদেশি প্যাভিলিয়ন এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। অনেক স্টল তৈরির কাজ এখনো শুরুই হয়নি। তবে শুধু বিদেশি প্যাভিলিয়ন নয়, মেলায় সাধারণ অনেক স্টলও গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চালু হয়নি।

সরেজমিনে গতকাল বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাণিজ্য মেলার মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করে হাতের ডান দিকে গেলেই চোখে পড়বে বিভিন্ন বিদেশি প্যাভিলিয়ন ও স্টল। এসব প্যাভিলিয়নের কয়েকটি শুধু একটি নির্দিষ্ট দেশের জন্য বরাদ্দ, আবার কয়েকটিতে একাধিক দেশের ব্যবসায়ীদের যৌথভাবে পণ্য বিক্রির সুযোগ আছে।

১১ নম্বর বিদেশি প্যাভিলিয়নে গিয়ে দেখা যায়, এখানে কমপক্ষে ১০টি স্টলের জায়গা থাকলেও গতকাল পর্যন্ত চালু হয়েছে পাঁচটি স্টল। যেগুলো চালু হয়েছে, সেগুলোতে পণ্য ঠিকভাবে সাজাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। চালু হওয়া একটি স্টলের নাম কাশ্মীর শাল হাউস। এতে পশমিনা শাল, চাদর, কাফতান, কুর্তা ও বিভিন্ন হাতে তৈরি কাপড় বিক্রি হচ্ছে। এ স্টলের বিক্রেতা ভারতের কাশ্মীরের ব্যবসায়ী জাহিদ মীর প্রথম আলোকে বলেন, এ বছর স্টল নিতে ৩ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। গত বছর একই স্টলের জন্য ব্যয় হয়েছিল ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এত ব্যয়ে স্টল অনেকেই নিতে পারছেন না।

একজন বিদেশি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, একটি প্যাভিলিয়নে সব স্টল চালু না হলে সেখানে ক্রেতারা কম যান। সব স্টল চালু হতে এক সপ্তাহ লেগে গেলে ব্যবসায়িক যে ক্ষতি হবে, সেটি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন।

১৫ নম্বর বিদেশি প্যাভিলিয়নটি বরাদ্দ পেয়েছে তুরস্কের ইস্তাম্বুল ক্রিস্টাল। এর সামনের অংশটি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ভেতরে পণ্য সাজানোর কাজ চলছে। পাশের প্যাভিলিয়নে তুরস্কের একটি কার্পেট বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান স্টল নিয়েছে। সেটিতেও পণ্য সাজানোর কাজ চলছিল। এর মধ্যেই দু-একজন ক্রেতাকে কার্পেট দেখতে দেখা যায়।

গতকাল পর্যন্ত বিদেশি প্যাভিলিয়নের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে চালু হয়েছে থাইল্যান্ডের প্যাভিলিয়নটি। থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী নকশায় সাজানো এ প্যাভিলিয়নের সব স্টলে প্রথম দিন থেকেই বেচা-বিক্রি চলছে বলে জানা গেল। পোশাক, খেলনা, জুতা-স্যান্ডেল, খাদ্যদ্রব্যসহ নানা রকমের থাই পণ্য এ প্যাভিলিয়নে বিক্রি হতে দেখা যায়।

আবুল খায়ের গ্রুপের গুঁড়ো দুধ ব্র্যান্ড মার্কসের প্যাভিলিয়ন গতকাল পর্যন্ত চালু হয়নি। মোটা একটি গাছের গুঁড়ির আদলে তৈরি করা হচ্ছে এই প্যাভিলিয়নটি। এ ছাড়া সাধারণ অনেক স্টল তৈরির কাজও গতকাল পর্যন্ত শেষ হয়নি। মেলা প্রাঙ্গণে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তৈরি ঝরনা ও দর্শনার্থীদের বসার জন্য বেঞ্চ তৈরির কাজও এখনো শেষ হয়নি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইসিবি) তথ্য অনুসারে, ৫৮৯টি বিভিন্ন শ্রেণির প্যাভিলিয়ন ও স্টল নিয়ে এবারের মেলা প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন, ৬৫টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ১৫টি সাধারণ প্যাভিলিয়ন, ২৬টি বিদেশি প্যাভিলিয়ন, ৬টি সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন, ৭টি সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন, ৭২টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৩টি বিদেশি প্রিমিয়ার স্টল, ২৬১টি সাধারণ স্টল, ৩১টি খাবারের স্টল, নারীদের জন্য সংরক্ষিত ২০টি স্টল এবং একটি বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র রয়েছে। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মেলায় প্রবেশ টিকিটের দাম ৩০ টাকা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা।

এদিকে মেলায় দর্শনার্থীদের যাওয়ার হার এখনো খুবই কম। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আগামী শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে।

Leave a Reply