কুমিল্লায় বিকাশ ব্যবসায়ী রাফি হত্যা;কিছু প্রশ্নে ঘুরে যেতে পারে তদন্তের মোড়।

ক্রাইম রিপোর্টারঃ কুমিল্লা নগরীর নূরপুর এলাকায় বিকাশ, নগদ ও রিচার্জ ব্যবসায়ী মোঃ গোলাম সারোয়ার রাফি(৩২) নামে এক ব্যক্তির লাশ গত ৩০/০১/২০২২খ্রিঃ তারিখ রাত্র বেলায় রাফির নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গুলশান আরা বেগম প্রঃ রোকসানা আক্তার (৩৪) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে গত ৩১/০১/২০২২খ্রিঃ তারিখ গ্রেফতার করে পুলিশ। হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার তথ্য ও গোপন সুত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, গুলশান আরা বেগম প্রঃ রোকসানা আক্তার এর পিতার বাড়ী ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায়। তাহার এক ছেলে ও স্বামী সৌদি প্রবাসী। সে তাহার এক মেয়ে সহ নগরীর নূরপুর এলাকায় ঘরবাড়ী করিয়া বসবাস করে।তাহার মেয়ে সহ একা বর্তমান ঠিকানায় বসবাস করে। ভিকটিম মোহাম্মদ রাফি সারোয়ার এর পরিবারও তাহার পাশাপাশি বসবাস করে। রাফির দোকানে সে মাঝে মাঝে মোবাইল ফোনে টাকা লোড সহ বিকাশ করিতে যাইতো। এক পর্যায়ে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন তাহাকে ধর্ম বোন ও মেয়ে হিসেবে সম্বোধন করিত। সে সুবাদে ভিকটিমের মা, ভাই-বোনদের সাথে তাহার আত্মীয়তার গভীর সম্পর্ক গড়িয়া উঠে। সে তাহাদের বাসায় আসা-যাওয়া করিত। এক পর্যায়ে তাহার সাথে ভিকটিম মোহাম্মদ রাফি সারোয়ার এর প্রেমের সম্পর্ক গড়িয়া উঠে। গত ২৯/০১/২২ইং তারিখ সে মোহাম্মদ রাফি সারোয়ার সাথে রাফির মা সৈয়দা আক্তারসহ, রাফির বড় বোনের বাসায় দাওয়াতে যায়।রাফির বড় বোনের বাসায় রাফির মা থেকে যায়। খাওয়-দাওয়া শেষে গত ২৯/০১/২২ইং তারিখ বিকাল রাফির মোটর সাইকেল যোগে বাসায় আসে। রাফি নিজ বাসায় চলে যায়। বাসায় যাওয়ার পরে মোহাম্মদ রাফি সারোয়ার তাহাকে মোবাইলে কল করিয়া রাফির বাসায় নেয়। বাসায় তাহাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা ও তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে মোহাম্মদ রাফি সারোয়ার ক্ষিপ্ত হইয়া তাহার রান্না ঘর হইতে গোলশান আরা ওরফে রোকসানা আক্তারকে হত্যা করার জ্ন্য মরিচ বাটার পুতা নিয়া আসে। গোলশান আরা ওরফে রোকসানা আক্তার উক্ত পুতা রাফির হাত হইতে কাড়িয়া নেওয়ার সময় উক্ত পুতার আঘাত রাফির কপালে লাগিয়া উক্ত আঘাতে রাফি মাটিতে লুটাইয়া পড়িয়া মৃত্যু বরন করে। আলোচ্য হত্যা মামলাটির ঘটনায় কিছু প্রশ্নের জবাবে মিলতে পারে রাফি হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন।
১। গুলশান আরার এক ছেলে ও স্বামী প্রবাসী থাকে। তাহার টাকা পয়সা আছে। এ কারনে তাহার সাথে পারিবারিক ও ব্যক্তিগত গভীর সম্পর্ক গড়ে তাহার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার রাফির কোন পরিকল্পনা ছিল কিনা?
২। ভিকটিম রাফি ও গুলশান আরার পরকীয়ার সম্পর্কের কোন ছবি কিংবা ভিডিও দিয়ে ভিকটিম রাফি গুলশান আরাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেছে কিনা?
৩। তাহাদের মধ্যে এত গভীর সম্পর্কের মাঝে কোন বিষয়ে তাহাদের মাঝে বাক বিতন্ডা হয়? টাকা পয়সা, ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা, নাকি ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করা?
৪। মরিচ বাটার পুতাটি কে কাকে মারার জন্য এনেছিল? যে আঘাতে রাফির মৃত্যু হয়েছে, সে আঘাতটি কি গুলশান আরা ইচ্ছাকৃত রাফিকে হত্যার উদ্দেশ্যে করেছে নাকি নিজে রাফির হাত থেকে বাঁচার জন্য আত্মরক্ষার্থে পুতা কেড়ে নেওয়ার সময় লেগেছে? এসব প্রশ্নের উত্তরই খোজে বের করতে পারলেই হয়তো উদঘাটিত হবে রাফি হত্যার মূল রহস্য।

Leave a Reply