তথ্য ও সম্প্রচার সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ আজ আকস্মিকভাবে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব জনাব মকবুল হোসেনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ধারা ৪৫ অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়। এই ধারায় বলা হয়েছে, ২৫ বছর পূর্ণ হলে যেকোনো সরকারি কর্মকর্তাকে সরকার চাইলে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে পারে। ঘটনাটি ছিল আকস্মিক এবং খুব কম মানুষই এ সম্পর্কে জানতেন। তথ্য সচিব মকবুল আজ অন্যান্য দিনের মতো তার কর্মস্থলে যোগ দিয়েছিলেন এবং সেখানেই তিনি জানতে পারেন যে, তাকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়েছে। খোদ প্রশাসনের কেউই এ বিষয়টি জানতেন না। সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই এই বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও তথ্য সচিব মকবুল হোসেনের অতীতের রেকর্ড ভালো ছিল না। তার বিরুদ্ধে একাধিকবার বিভাগীয় প্রসিডিংস তৈরি করা হয়েছিল এবং সেই সমস্ত বিভাগীয় অভিযোগ থেকে তিনি নিষ্কৃতিও পেয়েছিলেন। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উত্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু এসব সত্ত্বেও তিনি সচিব হন এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের মতো স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
অনেকেই মনে করেন যে, দীর্ঘদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগগুলো নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা খোঁজখবর রাখছিল এবং তার প্রেক্ষিতে তাকে অবসর দেয়া হয়েছে। কি কারণে আকস্মিকভাবে তথ্য সচিবকে অবসরে পাঠানো হলো এ নিয়ে প্রশাসনের ভেতর নানামুখী বক্তব্য পাওয়া গেছে। একাধিক সূত্র  নিশ্চিত করেছে যে, সরকারের অনেক গোপন তথ্য সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। কিছু কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতার নীতি অনুসরণ করেছিল। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশাসনের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগও উঠেছিল। আর এই সমস্ত বিষয়গুলো একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা অনুসন্ধান করছিল বলেও প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে। তবে ঠিক কি কারণে মকবুল হোসেনকে অবসরে পাঠানো হলো সে সম্পর্কে সরকারের কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য নেই। তবে একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এমন কিছু স্পর্শকাতর বিষয় তাকে নিয়ে ঘটেছিল যে সরকার এরকম কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য হয়েছেন।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, প্রশাসনের ভিতর এখন এরকম আরও কিছু কর্মকর্তা রয়েছেন, যে সমস্ত কর্মকর্তাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধেও সরকার কঠোর অবস্থানে যেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। যারা বিএনপি-জামায়াত ঘরোনার এবং বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ বিরোধী তৎপরতার সঙ্গে জড়িত ছিল বা বিএনপি জামায়াতের সময় সুবিধাভোগী ছিল-এদের পদোন্নতি ঘটেছে। এদের অনেকেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে এসেছেন। এই সমস্ত ব্যক্তিদের ব্যাপারে সরকার নজরদারি রাখছে এবং এদের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান সামনের দিনগুলোতে আরো কঠোর হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় মকবুল হোসেনকে অবসরে পাঠানো হলো বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে মকবুল হোসেনের ব্যাপারে  কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply