পালংশাক নাকি কলমিশাক

শীতে সবজির বাজারে পাওয়া যাচ্ছে পালংশাক ও কলমিশাক। এই দুই শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কথা হয় বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদের সঙ্গে।

তিনি জানালেন দুই ধরনের শাকের গুণাগুণ

পালংশাক

* এই শাকে আছে উচ্চমাত্রার ম্যাগনেশিয়াম, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এতে থাকা বেশি মাত্রার ভিটামিন এ, লিম্ফোসাইট বা রক্তের শ্বেতকণিকা দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে।

* এতে থাকা ১০টিরও বেশি ভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন চোখের ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন এ ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

* ফোলিক অ্যাসিড থাকায় তা হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। প্রাপ্তবয়স্ক ঘন সবুজ পালংপাতায় উচ্চমাত্রায় ক্লোরোফিল থাকায় এতে ক্যারোটিনয়েড বিদ্যমান আর তা আমাদের শরীরে ব্যথানাশক ও ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

* যাঁদের অ্যাজমা বা কিডনির সমস্যা আছে, তাঁদের পালংশাক না খাওয়া উচিত। এ শাক খেলে তাঁদের শারীরিকভাবে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।

* এক কাপ পালংশাক খাদ্য আঁশের দৈনিক চাহিদার ২০ শতাংশ পূরণ করার সঙ্গে সঙ্গে ভিটামিন এ ও কে-র দৈনিক চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য অপরিহার্য।

* কম ক্যালরি থাকার কারণে এটি শরীরের জন্য খুব উপকারী।

* উচ্চমাত্রার আয়রন, যা দেহে অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করে।

কলমিশাক

* কলমিশাকে ক্যালসিয়াম থাকে বলে এই শাক হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।

* রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যাঁদের বসন্ত রোগ রয়েছে, তাঁরা কলমিশাক খেতে পারেন। এ শাকটি বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।

* পর্যাপ্ত পরিমাণে লৌহ থাকায় এই শাক রক্তশূন্যতার রোগীদের জন্য উপকারী।

* কলমিশাক মাকে রান্না করে খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পায়। নিয়মিত কলমিশাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

* কলমিশাক কয়েক সপ্তাহ প্রতিদিন একবেলা ভাজি করে খেলে রাতকানা রোগ ভালো হয়।

* হাত-পা বা শরীর জ্বালা করলে কলমিশাকের রসের সঙ্গে একটু দুধ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।

* আমাশয় হলে কলমিপাতার রসের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকেল নিয়মিত খেলে আমাশয়ের উপশম হয়।

Leave a Reply