ভোটে ছোট স্ত্রীকে সমর্থন করে বড় স্ত্রীকে তালাক

ভোটে ছোট স্ত্রীকে সমর্থন করে বড় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল হক লেদার।রাজশাহীতে আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ঘটনার সূত্রপাত।
আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন নাছিমা বেগম ও ফিরোজা খাতুন। তবে স্বামীর আদেশ অমান্য করে ভোটের লড়াইয়ে থাকায় প্রথম স্ত্রী নাছিমা বেগমকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন রেজাউল হক। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পাঠান তিনি।
পরের দিন শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের ডেকে বিষয়টি জানান রেজাউল হক নিজেই। ওই সময় দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুনের পক্ষে সবাইকে কাজ করার অনুরোধও জানান।
নাছিমা বেগম মাড়িয়া ইউনিয়নের শিকদারী এলাকায় রেজাউল হকের বাড়িতে থাকেন। আর ফিরোজা খাতুন থাকতেন উপজেলার ভবানীগঞ্জে ভাড়া বাড়িতে। এই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে তাদের কেউই রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না।
জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন নাছিমা বেগম ও ফিরোজা খাতুন। এরপর থেকে প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। ওই পরিস্থিতিতে প্রথম স্ত্রী নাছিমা বেগমকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন রেজাউল হক। কিন্তু রাজি হননি নাছিমা।
নাছিমা বেগকে ‘তারকাটা’ বলে উল্লেখ করেছেন রেজাউল হক। তিনি বলেন, তাকে (নাছিমা) এবার দিয়ে ৯ বার তালাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সন্তানের কথা বিবেচনা করে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তবে এবার আর ফেরানোর সুযোগ নেই। তালাকের কাগজ বৃহস্পতিবার পাঠিয়েছি। রোববার-সোমবার পেয়ে যাবে।
এ বিষয়ে নাছিমা বেগম বলেন, তালাকের বিষয়টি শুনেছি। কোনো কাগজ পাইনি। স্বামীর সঙ্গে নিজ বাড়িতেই আছি। জয়-পরাজয় ও ভোটের ব্যবধানই প্রমাণ করবে কোন স্ত্রী কেমন জনপ্রিয়।
রেজাউল হক লেদার দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুন বলেন, আমার স্বামীই আমাকে প্রার্থী করেছেন। বলেছেন, তুমি শিক্ষিত মানুষ। প্রার্থী হও। আমি বলেছিলাম, প্রথম স্ত্রী যেহেতু প্রার্থী হয়েছেন, তার পক্ষেই থাকি। কিন্তু স্বামী মানেননি। তার ইচ্ছাতেই রাজনীতিতে নেমেছি।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, আগামী ১৭ অক্টোবর রাজশাহী জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বাগমারা, মোহনপুর ও দুর্গাপুরে সংরক্ষিত সদস্য পদে সাতজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে মাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী নাছিমা বেগম ও ফিরোজা খাতুন প্রার্থী হয়েছেন। অন্য পাঁচ প্রার্থী হলেন- পারুল বিবি, সুলতানা পারভীন, রাবেয়া খাতুন, লাল বানু ও নারগিস বিবি।

Leave a Reply