Site icon Doinik Bangla News

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কঠোর অবস্থান

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম সতর্কবার্তা এবং হুঁশিয়ারি দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে গেছে। প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সফরের পর ৫ দফা সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সফর করেছেন উপসহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী আফরিন আক্তার। এই সবকিছুর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে আগামী ৩ মাস তারা বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণে রাখবে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এরকম কঠোর অবস্থানের বিপরীতে সরকারও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কঠোর ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ কয়েকদিন নীরব থাকার পর এবার ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিশ্ব নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ওআইসিভুক্ত দেশগুলো রাষ্ট্রদূতকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী শনিবার রাষ্ট্রীয় দিবস ঘোষণা করেছেন ফিলিস্তিন জনগণের প্রতি সংহতি জানানোর জন্য। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

স্পষ্টতই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীত অবস্থা বেশ সারাসরি এবং স্পষ্টভাবে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে দিয়ে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একটি মধুর প্রতিবাদ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এছাড়াও বাংলাদেশ একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশে যে তেল অনুসন্ধান করছিল সেই তেল অনুসন্ধানের চুক্তি এখনই বাস্তবায়ন করবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এই তথ্য গণমাধ্যমকে জানান। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো এক অনিশ্চয়তার মুখে পড়লো বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে যে ধরণের কৌশলগত চুক্তিগুলো করতে চাচ্ছিল সেগুলোর কোন চুক্তিই বাংলাদেশ এখন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন পর্যন্ত সব চুক্তি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের এই কূটনৈতিক কৌশল, বিশেষ করে কোয়াড সহ অন্যান্য কৌশলগত জোটে না যাওয়া সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থানকে দৃঢ় করেছে। তাছাড়া এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিপরীতে বাংলাদেশের বুদ্ধিদীপ্ত কূটনীতি বলেও অনেকে মনে করছেন। এই সমস্ত পদক্ষেপের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব কি তা অবশ্য জানা যায়নি।

তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বার বার চাইছিল ড. ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়াকে আপাতত বন্ধ রাখার জন্য এবং বিচারের বাইরে একটি নিরপেক্ষ প্যানেল গঠন করে ড. ইউনূসে ইস্যুটিকে সুরাহা করার জন্য। সরকার তাতেও সাড়া দেয়নি। বরং ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতের মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে এবং আগামী এক মাসের মধ্যে বা নির্বাচনের আগে এই মামলার চূড়ান্ত সমাধান হবে।

বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন কেন্দ্রিক চাপ মোকাবিলার জন্য পাল্টা কূটনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছে। পাল্টা চাপ দিয়ে রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। বিশ্ব পরিস্থিতিতে ক্রমশ বাংলাদেশের অনুকূলে আসছে। আর বাংলাদেশের এই কূটনৈতিক কৌশল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অচেনা মাঠে খেলার মতোই। এখন দেখার বিষয় এই অবস্থা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর কতটুকু চাপ দিতে পারে।

Exit mobile version