

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
নারীর ক্ষমতায়ন, নিরাপত্তা ও সামাজিক অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে প্রতি বছর বেগম রোকেয়া দিবসে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সফল নারীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে লাকসাম উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ বছরও অনুষ্ঠিত হলো “অদম্য নারী পুরস্কার ২০২৫”—যেখানে লাকসাম উপজেলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের পাঁচজন নারী নিজেদের অসাধারণ সাফল্য ও সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বিশেষ স্বীকৃতি।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় লাকসাম উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে অবদান রাখা নারীদের মাঝে ক্রেস্ট, সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নার্গিস সুলতানা প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন। তিনি বলেন, “আজকের অদম্য নারীরা সমাজে পরিবর্তনের প্রতীক। তাঁদের সাফল্য প্রমাণ করে—সুযোগ ও পরিবেশ পেলে নারীরা সব ক্ষেত্রেই অগ্রগামী ভূমিকা রাখতে পারে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মানসী পাল। তিনি বলেন, “সফল নারীদের গল্প বেশি বেশি তুলে ধরতে পারলে সমাজ সচেতনতা বাড়ে, অনেকে প্রেরণা পায়। এ সম্মাননা নারীর অগ্রযাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করবে।”
পুরস্কারপ্রাপ্ত পাঁচ অদম্য নারী
১. অর্থনৈতিকভাবে সফল নারী — হাজেরা কুদ্দুস (রূপা)
লাকসাম পৌরসভার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজেরা কুদ্দুস নিজের পরিশ্রম, সততা ও উদ্যোগ দিয়ে স্থানীয়ভাবে একজন প্রতিষ্ঠিত নারী উদ্যোক্তা। তাঁকে লাকসাম উপজেলার সর্বোচ্চ “অদম্য নারী” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
২. শিক্ষা ও চাকরিক্ষেত্রে সফল নারী — ফারজানা চৌধুরী
উত্তর নরপাটি গ্রামের বাসিন্দা ফারজানা চৌধুরী শিক্ষাক্ষেত্রে সংগ্রাম, নিষ্ঠা ও সফলতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়।
৩. সফল জননী — মোসাম্মৎ কোহিনূর আক্তার
পরিবার পরিচালনা, সন্তানদের নৈতিক শিক্ষা এবং সমাজে মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পুরস্কৃত হন কোহিনূর আক্তার। তিনি পশ্চিম শ্মশান পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা।
৪. নির্যাতন জয়ী নারী — আলেমা আক্তার
প্রতিকূলতা ও নির্যাতনের কঠিন অভিজ্ঞতা পেছনে ফেলে নতুন জীবন গড়ে তোলার অসামান্য সাহসিকতার জন্য সম্মাননা পান বরইগাঁও গ্রামের আলেমা আক্তার। তাঁর দৃঢ়তা অন্য নারীদের জন্য শক্তির উৎস।
৫. সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখা নারী — আছমুন নাহার
দোখাইয়া গ্রামের আছমুন নাহার দীর্ঘদিন ধরে সমাজসেবা, মানবিক সহায়তা ও সামাজিক সচেতনতামূলক কাজে যুক্ত থেকে সমাজ পরিবর্তনে অবদান রেখে চলেছেন।
সম্মাননা গ্রহণ করে পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীরা বলেন,
“এই স্বীকৃতি আমাদের দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিল। সমাজ ও দেশের উন্নয়নে নারীরা যে বড় ভূমিকা রাখছে—এই পুরস্কার সেটিকেই আরও দৃঢ়ভাবে সামনে আনে। আমরা চাই—নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অগ্রগতিতে সমাজের সবাই একসঙ্গে কাজ করুক।
