বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর লাকসাম উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়ন সঞ্জিবন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

 লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি সাহায্যকারী বাহিনী। আনসার বাহিনীর ইতিহাস বহু পুরোনো ১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হয় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পদযাত্রা। তখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আনসার অ্যাক্ট পাস হওয়ার মাধ্যমে এটি গঠিত হয়। ইসলামে ‘আনসার’ শব্দটি ‘সাহায্যকারী’ বোঝায়, যা মদিনার বাসিন্দাদের বোঝাত যারা নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও তারা দেশের বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অংশ নিয়েছেন।

বাংলাদেশ আনসার বাহিনী ১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়।
প্রাথমিক ভিত্তি:
এটি মূলত পূর্ব পাকিস্তান আনসার আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ভারতে ব্রিটিশ গার্ডের কিছু সদস্য এর গঠনে অবদান রাখেন।

ইসলামে আনসাররা হলেন মদিনার সেই স্থানীয় বাসিন্দা যারা নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তাঁর অনুসারীদের (মুহাজিরুন) হিজরতের সময় আশ্রয় দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের আনসার:
আধুনিক আনসার বাহিনী বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী হিসেবে কাজ করে, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও অবদান
ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ:
আনসার বাহিনী ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণে আনসার সদস্যরা গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
প্রতিরক্ষা ভূমিকা:
১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় আনসার সদস্যরা দেশের সীমান্ত ফাঁড়িগুলোতে প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।

বর্তমানে আনসার বাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, ও বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য জনকল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত। এটি দেশের অন্যতম বৃহত্তম স্বেচ্ছাসেবী এবং আধা-সামরিক বাহিনী হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাহিনী হচ্ছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী যার সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬১ লক্ষ। যার বেশির ভাগই ভাতা বিহীন ভিডিপি সদস্য সদস্যা তাদের আত্ম সামাজিক উন্নয়ন ও নিজেদের স্বাবলম্বী ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ
এসজিপি, বিএএম, এনডিইউ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি একটি সঞ্জিবন প্রজেক্ট হাতে নেন যার মাধ্যমে উদ্যোমী আত্মবিশ্বাসী ভিডিপি সদস্যদের ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে তাদেরকে এই সঞ্জিবনী প্রজেক্টের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আনসার বাহিনীর “সঞ্জীবনী প্রকল্প” হলো বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী-এর একটি নতুন কর্মসূচি, যা দেশের তৃণমূল জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো আনসার ভিডিপি সদস্যদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা ও তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করা।
সঞ্জীবনী প্রকল্পের উদ্দেশ্য:
জীবিকা উন্নয়ন:
সদস্যদের নতুন দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা, যা তাদের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন:
সদস্যদের আর্থিক ও সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা।
কল্যাণমূলক কার্যক্রম:
সদস্যদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
বাস্তবায়ন:
এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘প্রান্তিক শক্তি’ নামক অন্য একটি কর্মসূচির সাথে একসাথে চালু করা হয়েছে।
এই কর্মসূচিগুলো দেশজুড়ে তৃণমূল জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারই দ্বারা বাহিকতায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কুমিল্লা রেঞ্জের কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নে এ প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে তাই পূর্ব প্রস্তুতি মুলক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় উত্তরদা ইউনিয়ন পরিষদ হল রুমে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,
কুমিল্লা জেলা কমান্ডেন্ট জনাব রাশেদুল ইসলাম,
লাকসাম উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার জনাব পিযুস কুমার ঘোষ ও নব নিযুক্ত লাকসাম উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার জনাব শাহ জালাল, ও লাকসাম উপজেলা আনসার ভিডিপি প্রশিক্ষক জনাব আল আমিন, উত্তরদা ইউনিয়ন দলনেত্রী মাকসুদা আক্তার, ও উত্তরদা ইউনিয়ন সহকারী আনসার কমান্ডার জনাব আবুল কালাম ও ভিডিপি সদস্য আলা উদ্দিন,শাহ এমরান,আশরাফুল ইসলাম,মাজেদা আক্তার, মহিন উদ্দিন,আবু কালাম,সহ ৩২ জনের এক প্লাটুন তরুন উদ্যোমি ভিডিপি সদস্য। জেলা কমান্ডেন্ট তার বক্তব্যে বলেন যারা অর্থের অভাবে ব্যবসা করতে পারছেন না বা বিভিন্ন ফল বাগান, শাক সবজি বাগান করতে পারছেন না মাছ চাষের জ্ঞান থাকা সত্বেও অর্থের অভাবে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে পারছেন না সেই ভিডিপি সদস্যদেরকেই প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা হবে এই সঞ্জিবনী প্রকল্পের মাধ্যমে।

Leave a Reply