নওয়াব ফয়েজুন্নেছা চৌধুরাণীর ১২২ তম মৃত্যু বার্ষিকী ও শোক সভা পালিত হয়

লাকসাম(কুমিল্লা) প্রতিনিধি।  কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় ভারতীয় উপমহাদেশীয় প্রথম ও একমাত্র মহিলা নওয়াব ফয়েজুন্নেছা চৌধুরাণীর ১২২ তম মৃত্যু বার্ষিকী ও শোক সভা নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মিলন চাকমা (ভারপ্রাপ্ত) ও লাকসাম থানার এসআই হারুন রশিদ সহ লাকসাম উপজেলার সকল কর্মকর্তাবৃন্দ এবং লাকসাম নওয়াব ফয়েজুন্নেছা ও বদরুনেছা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ও নওয়াব ফয়েজুন্নেছা সরকারি কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও বিএনসিসির সদস্যরা ও অংশগ্রহণ করেন।

সকাল ১০ ঘটিকার সময় লাকসাম নওয়াব ফয়েজুন্নেছা ও বদরুনেছা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের গেইট থেকে একটি শোক র্র্যালী নিয়ে নওয়াব ফয়েজুন্নেছা চৌধুরাণীর কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন লাকসাম উপজেলা প্রশাসন ও সাংবাদিক শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ। পরে নওয়াব ফয়েজুন্নেছা চৌধুরাণী হাউজ ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মিলন চাকমা। এবং স্কুলে কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকবৃন্দ।
বেলা সকাল ১০:৩০ মিনিটের দিকে নওয়াব ফয়েজুন্নেছা চৌধুরাণীর কাচারি ঘরের সামনে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বেলা ১১:০০ টার দিকে লাকসাম উপজেলা অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মিলন চাকমা (ভারপ্রাপ্ত) নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কামরুল হাসান রিয়াদ নওয়াব ফয়জুন্নেসা ও বদরুন্নেসা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব হেলাল উদ্দিন কামাল, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মানসী পাল, সহকারী প্রধান শিক্ষক পরিমল চন্দ্র ভৌমিক, সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা রাবেয়া বেগম, এবং মিজানুর রহমান সেলিম প্রমুখ।

বক্তারা নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর অবদান তুলে ধরে বলেন, তিনি একজন অনন্য নারী এবং সমাজ সংস্কারক ছিলেন। নারী শিক্ষার অগ্রদূত হিসেবে তিনি সমাজে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তার জীবন ও কর্ম আজও শিক্ষার্থী ও সমাজসেবকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী বাংলার প্রথম নারী নবাব ছিলেন। তৎকালীন বাংলায় জমিদার হিসেবে আরো কয়েকজন নারী দায়িত্বপালন করেছেন, কিন্তু নবাব উপাধি পাওয়া একমাত্র জমিদার ছিলেন নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী কেবল প্রথম নারী নবাব হিসেবেই নন, নারী শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জনহিতকর কাজের জন্য ইতিহাসে পরিচিত হয়ে আছেন।

এর বাইরে তিনি সাহিত্যচর্চা করতেন। মুসলমান নারীদের লেখা প্রথম বাংলা সাহিত্যকর্ম ‘রূপজালাল’ এর লেখক ছিলেন নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরী।

বাংলাদেশের সরকার ২০০৪ সালে নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানীকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে।

গবেষক এবং তাকে নিয়ে লেখা বইপত্রে তাকে একজন দৃঢ়চেতা নারী এবং প্রজা হিতৈষী জমিদার হিসেবে দেখা হয়েছে। শাসক হিসেবে তিনি দক্ষ ছিলেন

এ ছাড়াও, লাকসামের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং মসজিদে দোয়া ও মুনাজাতের আয়োজন করেন।

Leave a Reply