২৭ বছর পর চাঞ্চল্যকর রুহুল আমিন হত্যার বিচারের রায়, ১ জনের যাবজ্জীবন, প্রধান আসামীসহ বাকী সবাইকে খালাস

বাংলা নিউজ ডেস্ক : কুমিল্লায় ২৭ বছর পর রুহল আমিন (দুই হাত পঙ্গু) কে নৃশংসভাবে হত্যার বিচারের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল আদালত। রায়ে একজনের যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন এবং মামলার এজাহার ও চার্জসীটভুক্ত প্রধান আসামিসহ বাকী সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়ে এ রায় প্রদান করেন ট্রাইব্যুনাল আদালত।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) কুমিল্লার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত এর বিচারক মরিয়ম মুন মঞ্জুরি  এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত এর পাবলিক প্রসিকি্উটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ড. মোবারক হোসেন।

মামলার চার্জশিটভুক্ত  আসামীরা হলেন, কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানাধীন বুধইর গ্রামের দোনার বাড়ির মৃত সুরুজ মিয়ার পুত্র সন্তান, কন্যা, ছেলের স্ত্রী যথাক্রমে আকবর খান, আমির খান, আসলাম খান, আবু তাহের খান, আবুল বাসার খান, শাহের বানু, রেহেনা বেগম, মোর্শেদা বেগম, এবং পেয়ারা বেগম পেরু। মামলার এজাহার ও চার্জশিটভুক্ত ৩ নং আসামি অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক আসলাম খানকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়,  বাকী সবাই খালাস পায়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, অভিযুক্তরা বিগত ১৭/০৩/৯৬ইং তারিখ  একই গ্রামের বাসিন্দা বজলুর রহমান এর মালিকীয় ও ভোগ দখলীয় জমি হইতে জোর পূর্ব মাটি কাটিয়া নিতে গেলে তাহার ছেলে রুহুল আমিন(দুই হাত পঙ্গু) ও খোরশেদ আলম তাদের জমি হইতে মাটি কাটা নিষেধ করিলে অভিযুক্তরা দা, ছেনি, কোদাল ইত্যাদি দিয়া বজলুর রহমানের দুই ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে নৃশংস ভাবে কোপাইয়া রুহুল আমিন রক্তাক্ত জখম করিয়া রুহুল আমিনকে মৃত প্রায় অবস্থায় ফেলিয়া পালাইয়া যায়। ঘটনার ভিকটিম খোরশেদ আলম ও রুহুল আমিনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়া গেলে একই দিনে ভিকটিম রুহুল আমিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। উক্ত ঘটনার মামলার বিচার কাজ চলাকালে, পুত্রের হত্যাকারীদের বিচার না দেখেই মৃত্যু বরণ করেন মামলার বাদী বজলুর রহমান।

মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ,যুক্তিতর্ক শেষে অদ্য ০২/১১/২০২৩ খ্রি : তারিখ ট্রাইব্যুনাল আদালত এ রায় প্রদান করেন ।

রায় প্রদানকালে, আদালতে হাজির ছিলেন,মৃত রুহুল আমিনের মাতা, ভাই এবং তাহর একমাত্র কন্যা।

এদিকে উক্ত মামলার বাদী মৃত বজলুর রহমানের ছেলে খোরশেদ জানায়, ‍মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী থাকলেও, এরূপ রায়ে তাহারা সংক্ষুব্ধ এবং রায়ের সার্টিফাইড কপি পাওয়ার পর এ রায়ের  বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করিবেন।

ঘটনার ভিকটিম মৃত রুহুল আমিনের একমাত্র কন্যা জানায়,  ২৭ বছর যাবৎ পিতার হত্যার  বিচার দেখার জন্য আদালতের দিকে তাকিয়ে থেকেও ন্যায় বিচার পাই নাই। আদালত খুনিদের শাস্তি না দিয়ে খালাস দিলে, আমরা কার কাছে বিচার চাইব। এ বলে সে, কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।

এদিকে এলাকাবাসীও  এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায়ে আসামিগণ  খালাস পাওয়ায় হতবাক হয়েছেন।

Leave a Reply