

লাকসাম, (কুমিল্লা) উপজেলা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নের মনপাল গ্রামে সরকারি প্রায় ২৬ একর দখল হয়ে আছে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সরকারি খাল দখল করে মাছ চাষ করছে আবার কেউ খাল ভরাট করে বাড়ি ঘর করছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের কৃষি, সেচ এবং বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খালটির বিভিন্ন অংশে অবৈধভাবে দখল ও ভরাটের অভিযোগ উঠেছে, যার ফলে খালের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে এবং স্থানীয় পরিবেশ ও কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়—
- খালের দুই পাশ দখল করে বসতঘর বা বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে।
- কোথাও কোথাও খাল ভরাট করে জমি হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা দেখা গেছে।
- কিছু স্থানে পানি চলাচলের পথ সংকুচিত হয়ে পড়ায় বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
গ্রামের সাধারণ মানুষ জানান—
- খালের আগের গভীরতা ও প্রশস্ততা এখন আর নেই।
- সেচের কাজে অতিরিক্ত বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
- বৃষ্টি হলে পানি নামতে না পারায় বাড়িঘর ও রাস্তা জলাবদ্ধ হয়।
কিছু কৃষক অভিযোগ করেছেন যে, খাল সংকুচিত হওয়ায় তাদের ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকবার খাল পুনঃউদ্ধার ও পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা স্থায়ীভাবে বাস্তবায়িত হয়নি বলে এলাকার মানুষ দাবি করেন। তবে প্রশাসন জানিয়েছে—
- খালের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারি চলছে।
- দখল প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- পর্যায়ক্রমে খাল পুনঃখনন ও দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে সরকারি খাল দখল ও ভরাট হওয়ার প্রধান ক্ষতিগুলো হলো—
- জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি
- কৃষিতে সেচ সুবিধা কমে যাওয়া
- ভূগর্ভস্থ পানির স্বাভাবিক পুনঃসংরক্ষণ কমে যাওয়া
- জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি
মনপাল গ্রামে এসব প্রভাব ইতোমধ্যেই দেখা যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা বলছেন।
বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি নামতে না পারার ফলে বন্যা দেখা দেয়।
১. খালটির পূর্ণমাত্রায় ম্যাপিং ও চিহ্নিতকরণ
২. দখল করা অংশ পুনরুদ্ধারে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা
৩. স্থানীয় জনগণকে সাথে নিয়ে সচেতনতা ও কমিউনিটি উদ্যোগ
৪. খাল পুনঃখনন ও সংস্কার
৫. দখলমুক্ত এলাকার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ
মনপাল গ্রামের সরকারি খাল গুলো উপজেলা ও ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ জলাধার। এটি দখল বা ভরাট হয়ে গেলে শুধু কৃষি নয়, পুরো এলাকার পরিবেশ ও জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই প্রশাসন, স্থানীয় জনগণ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় খালটি দখলমুক্ত করে পুনরুদ্ধার করা এখন সময়ের দাবি।
