নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনার কঠোর বার্তা

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে চান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই বার্তাটি তিনি দেশে বিদেশে বারবার দিয়েছেন। দলের নেতাকর্মীদেরকেও অবিরত দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তার এই বার্তা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কতটা গ্রহণ করেছে তা নিয়ে এখন সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট ভাবে নির্বাচনের ব্যাপারে দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের কাছে পাঁচটি বার্তা দিয়েছেন এবং এই পাঁচটি বার্তা যেন তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয় সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিয়েছেন।

শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে নির্বাচনের ব্যাপারে যে পাঁচটি বার্তা দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে;

১. নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না: নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে কাজ করবে না। যদি কোনো প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে কেউ কাজ করে এবং তা যদি প্রমাণিত হয় তাহলে তার ব্যাপারে সরকার নির্মোহ ভাবে ব্যবস্থা নেবে। শুধু তাই নয়, নির্বাচন পরবর্তী সময়েও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

২. স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসানো যাবে না: স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যেন নির্বাচনে থাকে এবং তারা যেন নির্বাচনে সুষ্ঠু ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পায় সেটি নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীকে যদি হয়রানি করা হয়, প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করা হয় বা তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো তৎপরতা করা হয়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন।

৩. স্বতন্ত্রদের বিরুদ্ধে দল কোনো ব্যবস্থা নেবে না: আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। বরং তারা নির্বাচন করবে এটি তাদের সাংবিধানিক অধিকার। তারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করুক এবং নির্বাচনে তারা যদি জয়ী হয় তাহলে আওয়ামী লীগ সভাপতি তাদেরকে স্বাগত জানাবেন।

৪. নিজের শক্তিতে জয়ী হতে হবে: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শুধুমাত্র তারা দলের নেতাকর্মীদের না, ১৪ দলের সাথে বৈঠকেও একটি বার্তা দিয়েছেন। তা হলো যে এবার নির্বাচনে জয়ী হতে হবে নিজের শক্তিতে। কাউকে জিতিয়ে দেওয়া হবে বা সমঝোতা করে কাউকে পার করে আনা হবে এমন কাজ তিনি করবেন না। এ রকম যদি কেউ স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে তারা ভুল করছেন। দলে যারা এমপি মনোনয়ন পেয়েছেন তাদেরকেও এই বার্তা আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার নতুন করে তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা যেন শুধুমাত্র জনগণের ভোটের জন্য চেষ্টা ছাড়া অন্য উপায়ে জয়ী হওয়ার চেষ্টা না করেন। আর এই চেষ্টা করলে তার ফল ভাল হবে না বলেও আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

৫. নির্বাচন কমিশনের কাজে কোনো হস্তক্ষেপ না করা: নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দিতে হবে। তারা যেভাবে মনে করে সেভাবেই তারা কাজ করবে। তাদের কাজে যেন কেউ হস্তক্ষেপ না করে, তাদের কাজে যেন কেউ সমালোচনা না করে। নির্বাচন কমিশন সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে ওসি এবং প্রশাসন বদল করেছে তা নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতার মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। এ নিয়ে তারা সভাপতির কাছেও ধর্না দিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কোনো ধরনের নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ নির্বাচন কমিশনকে করতে দিতে হবে।

এই পাঁচ বার্তা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে গেলে নির্বাচনের জন্য একটি অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল মহল মনে করেন।

Leave a Reply