বিএনপি’র এখন মাথা নষ্ট

বাংলা নিউজ ডেস্কঃ ক্রমশ অবিশ্বাস, সন্দেহ দানা বেঁধে উঠছে বিএনপিতে। কেউ কাউকে বিশ্বাস করছেন না। কোন নেতা কখন ঝাঁপ দেন বা নির্বাচনে যান এ নিয়ে চলছে নানা রকম গুঞ্জন। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যে কোনও সময় বিএনপির মধ্যে এক ধরণের বিস্ফোরণ দেখা দিতে পারে।

গত কিছুদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এখন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়াও বিএনপি করা এমন শতাধিক নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ রক্ষা করছেন না। আত্মগোপনের নামে আসলে তারা নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন এবং নির্বাচনের মনোনয়নের দিন তারা আকস্মিকভাবে মনোনয়ন জমা দেবেন এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বিএনপির অন্তত ১৭৫জন বিভিন্ন স্তরের নেতা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক এবং প্রার্থী হওয়ার জন্য তারা এলাকায় প্রস্তুতি শুরু করেছে এবং তাদের কর্মীরা এ নিয়ে জনসংযোগও করছে। ফলে সরকারের বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলন এবং অবরোধ, হরতাল ইত্যাদি পানসে হয়ে গেছে। বিএনপির হাই কমান্ড এর কাছেও এই তথ্য এসেছে এবং তারা এ নিয়ে চিন্তিতও বটে।

বিএনপির মধ্যে এখন এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে একজন আরেকজনকে বিশ্বাস করতে পারছে না। কে কখন কী অবস্থায় যায় এবং কাকে সরকার কি টোপ দেয় এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে চলছে নানা রকম গুঞ্জন, কানাঘুষা। বিএনপির যে নেতার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, যে নেতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তখনই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সন্দেহ করছেন, হয় তিনি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে গোপন যোগসাজোশ করছেন অথবা তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। যখন দেখা যাচ্ছে তিনি গ্রেপ্তার হননি তখন বিএনপি নেতাদের মধ্যে সন্দেহ দানা বেঁধে উঠেছে।

আর বিএনপির মধ্যে এই প্রথমবারের মতো একটি অবিশ্বাস এবং সন্দেহ দানা বেঁধে উঠেছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, গত ১৭ বছরে দলটি ভাঙেনি কিন্তু এবার নির্বাচনের আগে দলটি বড় ধরনের ঝাঁকুনির মুখে পড়েছে। দলের মধ্যে কী হচ্ছে না হচ্ছে, তা নিয়ে তারা নিজেরাই সন্দিহান, কারণ কাউকেই বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। অনেক নেতা বলছেন আত্মগোপনে আছেন, কিন্তু যখন দেখা যাচ্ছে যে তার কর্মীরা নির্বাচনের জন্য মাঠে জনসংযোগ করছেন, তখন বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে।

কেন বিএনপির নেতারা এটি করছেন এর কোনও সঠিক উত্তর কেউ দিতে পারেনি। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপিতে যারা মাঠের রাজনীতি করেন, জনসম্পৃক্ত এবং জনগণের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন তারা বুঝতে পারছেন যে, এই আন্দোলন অর্থহীন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে আর যেই হোক সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। বরং এই ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপিরই ক্ষতি হচ্ছে, ক্রমশ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। আর এ কারণেই বিএনপির নেতারা এখন হতাশায় ভুগছেন। অনেকে হতাশা থেকে নির্বাচনে যাওয়ার কথা বলছেন, আবার কেউ কেউ মনে করছেন যে নির্বাচনে গেলে সরকারের যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক থেকে বাঁচা যাবে, আবার অনেককে টোপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কাউকেই সরকার টোপ দেয়নি। সরকার ভাঙা-গড়ার রাজনীতি করে না। বিএনপির নেতারা স্বেচ্ছায় নির্বাচনমুখী হচ্ছে। ফলে বিএনপি তে এক ধরনের অবিশ্বাস, আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

Leave a Reply